রাজশাহীতে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত গণিউলের মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর তানোরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুরুতর আহত গণিউল ইসলাম (৫০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বুধবার বিকেলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার বিকেলে তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়ন বিএনপি বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় কৃষ্ণপুর মহিলা কলেজ প্রাঙ্গণে দোয়া ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী মেজর জেনারেল (অব.) শরীফ উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রভাষক মুজিবুর রহমান এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবুল গাফফার। প্রধান বক্তা ছিলেন রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও তানোর পৌরসভার সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান।
শরীফ উদ্দিনকে বরণ করতে কৃষ্ণপুর মোড়ে অপেক্ষা করছিলেন ইউনিয়ন বিএনপির বর্তমান সভাপতি মুজিবুর রহমানের সমর্থকেরা। একই সময়ে সেখানে উপস্থিত হন সাবেক সভাপতি মোমিনুল হক মমিনের সমর্থকেরাও। মোমিনের সমর্থকেরা শরীফ উদ্দিনকে বরণ করতে চাইলে মুজিবুর রহমানের সমর্থকেরা বাধা দেয়, যার ফলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
সংঘর্ষে গুরুতর আহত গণিউল ইসলামকে দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের মুখপাত্র ও জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. শংকর কে বিশ্বাস জানান, গণিউলের শরীরে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন ছিল এবং তার অবস্থা সংকটাপন্ন ছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার বিকেল ৩টার দিকে তিনি মারা যান।
স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, পাঁচন্দর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মুজিবুর রহমান শরীফ উদ্দিনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। অপরদিকে, মোমিনুল হক মমিন দীর্ঘদিন রাজনৈতিকভাবে নিষ্ক্রিয় ছিলেন, তবে গত ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি আবার সক্রিয় হয়ে ওঠেন।
ঘটনার বিষয়ে জানতে মুজিবুর রহমান ও মোমিনুল হক মমিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি, এবং তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ ছিল।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আখেরুজ্জামান হান্নান বলেন, “কেন এবং কীভাবে এ হামলার ঘটনা ঘটল, তা জানা নেই।” রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও তানোর পৌরসভার সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান বলেন, “এটি একেবারে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। ভেতরে ভেতরে যে এমন কিছু ঘটতে পারে, তা বোঝা যায়নি।”
তানোর থানার ওসি আফজাল হোসেন বলেন, “ইফতার অনুষ্ঠানে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। গণিউলের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। তার পরিবারের সদস্যদের মামলা করার জন্য বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”