৫ বছরে এমপি আয়েনের জমি বেড়েছে ৭৫ বিঘা

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন গত নির্বাচনে তার হলফনামায় নিজের নামে শুধু ২ বিঘা কৃষিজমি থাকার কথা উল্লেখ করেছিলেন। পাঁচ বছরের ব্যবধানে সেই ২ বিঘা জমি বেড়ে হয়েছে ৭৭ বিঘা। শুধু তা-ই নয়, ইজারা নিয়ে মাছের চাষ করছেন আরও ২৩৩ বিঘা জমিতে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আয়েন উদ্দিনের বাড়ি মোহনপুর উপজেলার মহিষকুন্ডি গ্রামে। তিনি বর্তমানে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিটে প্রথমবারের মতো সাংসদ নির্বাচিত হন আয়েন উদ্দিন। একাদশ সংসদ নির্বাচনেও তিনি দলের মনোয়ন পেয়েছিলেন।

এবার তার আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান। ফলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন দুইবারের এমপি আয়েন উদ্দিন।

মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনের হলফনামা ঘেঁটে দেখা গেছে, ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় তাঁর নিজ নামে দুই বিঘা কৃষিজমি ছিল। অথচ কৃষি থেকে আয় দেখিয়েছিলেন ১১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। কোনো মৎস্য খামার দেখাননি তখন। অথচ মৎস্য চাষ থেকে আয় দেখানো ছিল ২০ লাখ টাকা।

এবারের নির্বাচনে তার নিজ নামে কৃষিজমির পরিমাণ দেখিয়েছেন ৭৭ বিঘা। যার মূল্য দেখানো হয়েছে ৩ কোটি ২৭ লাখ ২০ হাজার ৩২৬ টাকা। আর ইজারা নিয়ে মাছ চাষ দেখিয়েছেন ৭৭ দশমিক ৭৯ একর (প্রায় ২৩৩ বিঘা) জমিতে। এ থেকে আয় দেখিয়েছেন ১৭ লাখ ৬১ হাজার ৮৬৩ টাকা। জমি বাড়ার পরও আগের মেয়াদের চেয়ে তিনি এবার আয় কম দেখিয়েছেন।

রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন বলেন, গত ১০ বছর সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি সম্মানী পেয়েছেন। তিনি নিজে জমি ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করেছেন। এসব আয়ের ওপর তিনি কর দিয়েছেন। তার সবকিছু পরিষ্কার। বিলের পতিত জমি অল্প দামে পেয়েছেন, তাই কিনেছেন বলে দাবি করেন দুইবারের এই এমপি।

২০১৮ সালের নির্বাচনে আয়েন উদ্দিন বার্ষিক আয় দেখিয়েছিলেন ৩৯ লাখ ৪৫ হাজার ৫০৬ টাকা। এই আয় তার ২০১৪ সালের নির্বাচনের আয়ের প্রায় ১৬ গুণ ছিল। ওই নির্বাচনের সময় তার হলফনামায় বার্ষিক মোট আয় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা উল্লেখ ছিল। একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তার দাখিল করা হলফনামা থেকেই আয় ও সম্পদ বৃদ্ধির এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

এবার আয়েন উদ্দিনের নিজের ব্যাংক হিসাবে কোনো টাকা নেই। তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে ৮৯ হাজার ৪৭৩ টাকা দেখিয়েছেন। গত নির্বাচনের সময় আয়েন উদ্দিনের ব্যাংকে ছিল ৪৩ লাখ ৮২ হাজার ৯২২ টাকা। আর স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে ছিল ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৬৯১ টাকা। তার স্ত্রী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন।