সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পরিবারের বিরুদ্ধে ৬ মামলার চার্জশিট অনুমোদন
পূর্বাঞ্চলে প্লট জালিয়াতির ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের জোরালো পদক্ষেপ
টুইট ডেস্ক: পূর্বাঞ্চলের অবৈধ প্লট বরাদ্দ ও জালিয়াতির ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ৬ মামলার চার্জশিট অনুমোদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (১০ মার্চ) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
দুদকের অনুসন্ধানে পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন প্লট ও ফ্ল্যাটের সম্পদ নিয়ে ব্যাপক তদন্ত চালানো হয়। তদন্তে জানা যায়, অবৈধভাবে প্লট বরাদ্দ প্রদানের প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে।
সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এবং শেখ হাসিনার সাবেক একান্ত সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন-এর দায়ও চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এছাড়াও শেখ হাসিনার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয়-এর প্লট বরাদ্দের নথি গায়েব বা নষ্ট হওয়ার অভিযোগও তোলা হয়েছে।
এই অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয়ার মাধ্যমে আসামিদের বিরুদ্ধে সমন, গ্রেফতারি পরোয়ানা ও অন্যান্য আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে সূত্র হতে জানা গেছে।
দুদকের সূত্রে জানা গেছে, গত জানুয়ারিতে শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন রেহানা এবং তাঁদের সন্তানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছিলো, যা এই চার্জশিটের ভিত্তি হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে।
তদন্ত প্রক্রিয়া প্রায় দুই মাস ধরে চলার পর, প্রাপ্ত প্রমাণ ও নথিপত্রের ভিত্তিতে চার্জশিট অনুমোদন করা হয় বলে সুত্র নিশ্চিত করেছে।
অভিযোগপত্রে মোট ২৩ জনকে আসামি করে উল্লেখ করা হয়েছে, যারা পূর্বাচলের অবৈধ প্লট বরাদ্দ ও জালিয়াতির ঘটনায় জড়িত।
এছাড়াও, প্লট বরাদ্দে প্রভাব বিস্তার করতে ব্যবহৃত অস্বাভাবিক প্রক্রিয়া ও নথিপত্রে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে, যার মধ্যে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক-কেও অভিযুক্ত করা হয়েছে।
দুদক নিশ্চিত করেছে যে, শীঘ্রই -আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে এবং এরপর আইনি কার্যক্রম শুরু হবে।
সূত্র দাবী করে, পূর্বাঞ্চলের এই অবৈধ প্লট বরাদ্দ ও জালিয়াতির ঘটনায় দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
২০২২ সালে পূর্বাচলের নতুন শহর প্রকল্পে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা ১০ কাঠা করে ৬টি প্লট বরাদ্দ নেন।
এরপর রাজধানীতে অবৈধভাবে অতিরিক্ত প্লট গ্রহণের অভিযোগ উঠায় গত জানুয়ারিতে শেখ হাসিনা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
এই পরিস্থিতিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দেশের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আশাবাদ প্রকাশ করেছে।
সামাজিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এই ঘটনাকে বাংলাদেশের প্রশাসনিক দুর্বলতা ও দুর্নীতি প্রক্রিয়ার একটি স্পষ্ট উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করছেন।
গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের মধ্যেও এই ঘটনার ব্যাপারে ব্যাপক ক্ষোভ ও নিন্দা উঠেছে।
অনেক সমালোচক দাবি করেন, দেশের শীর্ষ পদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত, যাতে ভবিষ্যতে ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করা যায়।
পূর্বাঞ্চলের প্লট জালিয়াতির ঘটনায় শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে ৬ মামলার চার্জশিট অনুমোদন করে দুর্নীতি দমন কমিশন দেশের দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আসামিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে দুর্নীতির চক্র ভাঙতে আশা প্রকাশ করেছে দুদক । (সূত্র: আমার দেশ)