ঋণের দায়ে প্রাণ দিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারি

নিজস্ব প্রতিবেদক : নিজ বাড়ির বাথরুম থেকে রাজন কুমার (৪৫) নামে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার সকাল ৮টার দিকে বাথরুমের দরজা ভেঙ্গে রাজনকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবারের লোকজন। হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করে। দাদানকারবারি ও এনজিও’র ঋণের চাপে রাজন আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি করেছে তার পরিবার।

নিহত রাজন কুমারের বাড়ি নগরীর রাজপাড়া থানার লক্ষ্মীপুর বাকির মোড় এলাকায়। তার বাবার নাম অসিত কুমার। রাজন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সুইপার পদের কর্মচারি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে কর্মরত ছিলেন।

রাজনের স্ত্রী রাখি রাণী জানায়, মানব সেবা উন্নয়ন নামে একটি এনজিও থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা ঋণ নেয়। এর বিপরিতে মাসে ১০ হাজার টাকা কিস্তি দিতে হয়। আরও সাতটি কিস্তি বাকি আছে। আজ সোমবার কিস্তি দেয়ার দিন ছিল। কিন্তু তার কাছে কিস্তি দেয়ার কোন টাকা ছিলনা।

এছাড়াও আইডি বাগানপাড়া এলাকার একরাম আলীর ছেলে সাদি নামের এক দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২ লাখ টাকা ঋণ নেয়। সুদ ও আসল মিলে তাকে ৩ লাখ টাকা পরিষদ করে। সে আরও ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। এর মধ্যে ৩০ হাজার টাকা দেয়। ২০ হাজার টাকার জন্য সাদি ও তার ভাই রকি চাপ দিচ্ছিল। রোববার রাতে ফোন করে আজকের মধ্যে ২০ হাজার টাকা না দিলে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয় সাদি। এ কারণে রাজন আ’ত্মহ’ত্যা করে বলে দাবি করেন তার স্ত্রী রাখি রাণী।

রাজপাড়া থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, রাজন বাড়ি করার জন্য সুদের উপর একটি এনজিওসহ কয়েকজনের কাছ থেকে ৫/৬ লাখ টাকা ঋণ নেয়। এর মধ্যে কিছু টাকা পরিষদ করেছে। তবে বাকি টাকার জন্য পাওনাদাররা চাপ দিচ্ছিল। এ কারণে তিনি আ’ত্মহ’ত্যা করে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এ মৃত্যুর পিছনে আর কোন কারণ আছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান ওসি।

এদিকে, দুপুরে নগরীর লক্ষ্মীপুর মোড়ে লাশ নিয়ে বিক্ষোভ করে হরিজন পল্লীবাসী। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়ার সময় তারা বিক্ষোভ করে। এ সময় দাদনকারবারি সাদি ও রকিকে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানান।