হাসনাত আবদুল্লাহর বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে: প্রকৃত সত্য কী?

হাসনাত আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে ভাঙচুরের অভিযোগ মিথ্যা: সেন্ট্রাল হাসপাতালের বক্তব্য

টুইট ডেস্ক: সম্প্রতি সাংবাদিক জিল্লুর রহমান তার এক ভিডিও বার্তায় দাবি করেন যে, সেন্ট্রাল হাসপাতালে একটি শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় হাসনাত আবদুল্লাহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ভাঙচুরের হুমকি দিয়েছেন। তবে এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

সেন্ট্রাল হাসপাতালের বক্তব্য

সেন্ট্রাল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড. কিবরিয়া বলেন, “হাসনাত আবদুল্লাহ আমাকে কোনো ভাঙচুরের হুমকি দেননি। বরং তিনি মানবিক কারণে মৃত শিশুটির পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। সেই রোগীর স্বজনকে আমরা প্রায় ৫০ শতাংশ ছাড় দিয়েছি।”

ঘটনার বিস্তারিত

ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একটি শিশুর মৃত্যু হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা বাবদ ২ লাখ ২০ হাজার টাকা বিল করে, যার মধ্যে নিহত শিশুর পরিবার ১ লাখ টাকা পরিশোধ করে; বাকি ১ লাখ ২০ হাজার টাকা বকেয়া থাকে। সম্পূর্ণ বিল পরিশোধ না করা পর্যন্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃতদেহ হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানায়।

শিশুটির পরিবার হাসনাত আবদুল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করলে, তিনি হাসপাতালের সঙ্গে কথা বলে মানবিক কারণে বিল কমানোর অনুরোধ জানান। তবে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রথমে কোনো ছাড় দিতে রাজি হয়নি। হাসনাত আবদুল্লাহ কুমিল্লায় অবস্থান করায়, তিনি তার পরিচিত দুইজনকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার জন্য পাঠান।

এই ঘটনাকেই সাংবাদিক জিল্লুর রহমান ‘ভাঙচুরের হুমকি’ বলে উপস্থাপন করেন, যা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও হাসনাত আবদুল্লাহ দুজনেই অস্বীকার করেছেন।

হাসনাত আবদুল্লাহর বক্তব্য

হাসনাত আবদুল্লাহ তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্টে জানান, “আমি শুধু মানবিক কারণে হাসপাতালের সঙ্গে কথা বলেছি। টাকা কমানো বা মওকুফ করার এখতিয়ার হাসপাতালের, আমি শুধু অনুরোধ করতে পারি। অথচ, এটাকে বিকৃতভাবে ‘ভাঙচুরের হুমকি’ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা স্পষ্টত মিথ্যাচার।”

তিনি আরও বলেন, “জিল্লুর রহমান আমার কোনো বক্তব্য না নিয়েই একপাক্ষিক ভিডিও তৈরি করেছেন, যা নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার সংজ্ঞায় পড়ে না।”

হাসনাত আবদুল্লাহ’র সামাজিক ফেসবুক পোস্টে লিখেন-

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাংবাদিক জিল্লুর রহমানের একটি ভিডিও প্রচারিত হয়েছে, যেখানে তিনি দাবি করেছেন যে, রাজধানীর একটি হাসপাতালের সঙ্গে কথোপকথনে আমি ‘ধমকের’ সুরে কথা বলেছি এবং হাসপাতাল গুঁড়িয়ে দেওয়ার ‘হুমকি’ দিয়েছি। তবে, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা।

গতকাল সকালে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একটি শিশুর মৃত্যু হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা বাবদ ২ লাখ ২০ হাজার টাকা বিল করে, যার মধ্যে শিশুটির পরিবার ১ লাখ টাকা পরিশোধ করে; বাকি ১ লাখ ২০ হাজার টাকা বকেয়া থাকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ বিল পরিশোধ না করা পর্যন্ত মৃতদেহ হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানায়। দিশেহারা পরিবার আমার সঙ্গে যোগাযোগ করলে, আমি তাদের মোবাইল থেকেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করি। আমি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিল কমানোর অনুরোধ করি, তবে কর্তৃপক্ষ কোনো সহযোগিতা করতে রাজি হয়নি। কুমিল্লায় অবস্থান করায়, আমি পরিচিত দুইজনকে হাসপাতালে গিয়ে পরিবারকে সহায়তা করতে বলি। এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ‘হাসপাতাল ভাঙচুরের হুমকি’ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

সাংবাদিক জিল্লুর রহমান তার ভিডিওতে দাবি করেছেন যে, আমি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ‘হুমকি’ দিয়েছি। তবে, তিনি আমার পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য না নিয়েই এই দাবি করেছেন, যা সাংবাদিকতার নীতির পরিপন্থী। তাঁর এই একপাক্ষিক বক্তব্য আমাকে হতাশ করেছে।

সাংবাদিক জিল্লুর রহমানের এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমি আশা করি, ভবিষ্যতে তিনি বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার মান বজায় রেখে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করবেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, একজন অভিজ্ঞ সাংবাদিকের উচিত ছিল সব পক্ষের বক্তব্য নেওয়া। কিন্তু জিল্লুর রহমান সরাসরি হাসপাতালের পক্ষে অবস্থান নিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সেন্ট্রাল হাসপাতালের পরিচালক নিজেই বলেছেন যে, হাসনাত আবদুল্লাহ কোনো হুমকি দেননি, বরং রোগীর পরিবারকে সহায়তা করতে চেয়েছিলেন। এতে স্পষ্ট হয় যে, জিল্লুর রহমানের অভিযোগ বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ভবিষ্যতে সাংবাদিকদের দায়িত্বশীলতার সঙ্গে তথ্য যাচাই করে প্রচার করা উচিত।