ডিজিএফআইয়ের সাবেক প্রধানের বাসায় মিলল কোটি টাকা
টুইট ডেস্ক: প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) লেফটেন্যান্ট জেনারেল সাইফুল আলমের বাসা থেকে ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা উদ্ধার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অভিযান ও অর্থ উদ্ধারের বিবরণ
রবিবার (২ মার্চ) দুপুরে দুদকের একটি বিশেষ দল রাজধানীর গুলশান এলাকায় সাইফুল আলমের বাসায় অভিযান চালায়। অভিযানে বিছানার নিচে, আলমারি ও লকার থেকে বান্ডিল বান্ডিল টাকা উদ্ধার করা হয়।
দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা অভিযান চালিয়ে নগদ অর্থ জব্দ করেছি। টাকার উৎস সম্পর্কে তদন্ত চলছে।”
টাকার উৎস ও সন্দেহের কারণ
দুদক সূত্রে জানা গেছে, এই বিপুল পরিমাণ অর্থের কোনো বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি সাবেক ডিজি সাইফুল আলম। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ লুকানোর অভিযোগে তাকে নজরদারিতে রাখা হয়েছিল।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাইফুল আলমের নামে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পাওয়ার পরই তার বাসায় অভিযান চালানো হয়।
সাবেক ডিজির অতীত দায়িত্ব ও অবসর
সাইফুল আলম সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ছিলেন—ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক (ডিজি), সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল, ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের কমান্ড্যান্ট ও ১১ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি।
২০২৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ইস্যু করা এক প্রজ্ঞাপনে তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়।
অর্থ কেলেঙ্কারির তদন্ত ও ব্যাংক হিসাব জব্দ
সর্বশেষ বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) তার ব্যাংক হিসাব জব্দ করে। একই সঙ্গে তার স্ত্রী ও সন্তানদের নামে থাকা অ্যাকাউন্ট ও তাদের মালিকানাধীন ব্যবসার ব্যাংক অ্যাকাউন্টও স্থগিত করা হয়।
আটক ও পরবর্তী পদক্ষেপ
দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অর্থ জব্দের পাশাপাশি সাইফুল আলমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে তলব করা হতে পারে। যদি তিনি সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারেন, তবে তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা হতে পারে।
সংশ্লিষ্টদের প্রতিক্রিয়া
বিশ্লেষকরা বলছেন, সাবেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দুর্নীতির দায় নিয়ে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। সামাজিক মাধ্যমে সাধারণ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, “দেশের টাকার এভাবে অপচয় আর লুটপাট বন্ধ হওয়া দরকার।”
তদন্তের অগ্রগতি ও সম্ভাব্য মামলা
দুদক নিশ্চিত করেছে যে, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য কেউ আছে কি না, সেটাও তদন্ত করা হবে। এর আগেও একাধিক সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে।