নাটোরে ছাত্রদল সভাপতি ছাত্রলীগ নেতা, পরে কমিটি বিলুপ্ত

ছাত্রদলের কলেজ শাখার সভাপতি হওয়া ছাত্রলীগ নেতা মো. শাকিল হোসেন। ছবি : সংগৃহীত

টুইট ডেস্ক: নাটোরের সিংড়া উপজেলার কলম ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন মো. শাকিল হোসেন, যিনি আগে কলম ইউনিয়ন ছাত্রলীগের উপক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন। এ ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়।

স্থানীয় বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, একজন ছাত্রলীগ নেতাকে ছাত্রদলের সভাপতি করায় সংগঠনের আদর্শ ও নিয়ম ভঙ্গ হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শাকিল হোসেনের ছাত্রলীগের পদে থাকার অফিসিয়াল প্যাড ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তার অংশ নেওয়ার ছবি ভাইরাল হয়।

নবনিযুক্ত ছাত্রদল সভাপতি শাকিল হোসেন জানান, “আমার এলাকার একজন ছাত্রলীগ নেতা ছাত্রদলের কমিটিতে আমার নাম দিয়েছিল, বিষয়টি আমি জানতাম না। এলাকাভিত্তিক রাজনীতির কারণে একবার ছাত্রলীগের একটি প্রোগ্রামে গিয়েছিলাম। সেই ছবি ভাইরাল হয়েছে। তবে আমি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত, এটি সবাই জানে।”

এ ঘটনায় নাটোর জেলা ছাত্রদল দ্রুত তদন্ত করে সিদ্ধান্ত নেয়। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে নাটোর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি কামরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মারুফ হোসেন সৃজন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ভুল তথ্য ও মিথ্যা তথ্য দেওয়ার কারণে কলম ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে।

জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মারুফ হোসেন সৃজন বলেন, “আমরা জানার পরই তদন্ত করেছি। প্রাথমিক সদস্য ফরমে তথ্য গোপন করা হয়েছিল। বিষয়টি জানার পরপরই কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে।”

বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। ছাত্রলীগ নেতারা বিষয়টি নিয়ে উপহাস করলেও বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

একজন ছাত্রদল কর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “বহিরাগত কেউ কীভাবে ছাত্রদলের সভাপতি হতে পারে? দলীয় আদর্শ রক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রদলকে দ্রুত এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।”

অন্যদিকে, একজন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, “যে ব্যক্তি ছাত্রলীগের পদে ছিলেন, তিনি কীভাবে ছাত্রদলের সভাপতি হন? এটি বিএনপির সাংগঠনিক দুর্বলতারই প্রমাণ।”

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নাটোরের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা ও কমিটি গঠনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সংগঠনটির ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হতে হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।