সীমান্তে মনু বাঁধ নির্মাণ বন্ধ, কৃষক ও বাসিন্দাদের উদ্বেগ

মনু বাঁধ পুনর্নির্মাণে বিএসএফের বাধা

টুইট ডেস্ক: ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী মনু নদীর তেলি বিল, বাগজুর ও নিশ্চিন্তপুর এলাকায় বাঁধ পুনর্নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছে। এতে ওই অঞ্চলের কৃষি, বাসস্থান ও জীবিকার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

২০২২ সালে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া টু মৌলভীবাজার পর্যন্ত ৮৬ কিলোমিটার দীর্ঘ বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধের কাজ শুরু হয়। কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের জিরো লাইনের কাছে মাটি ফেলে এই প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়।

২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে উক্ত এলাকার তেলি বিল, বাগজুর ও নিশ্চিন্তপুর এলাকায় বাঁধের নির্মাণকাজ শুরু হয়।

২০২৪ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাটি পুনরায় রক্ষার জন্য দ্রুতগতিতে কাজ শুরু করেছিল মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড।

ভারতের ত্রিপুরার বিধানসভার সদস্য বিরোজিৎ সিনহা ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারতের অংশে বাঁধ নির্মাণের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। এর পরপরই বিএসএফ কুলাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী তেলি বিল, বাগজুর ও নিশ্চিন্তপুর তিনটি পয়েন্টের বাঁধ নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়।

বাঁধ নির্মাণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সীমান্তবর্তী এলাকার কৃষি ও বসবাসের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। স্থানীয়রা আগাম বন্যার আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।

মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খালেদ বিন ওয়ালিদ জানান, ভারত দাবি করছে বাংলাদেশ তাদের সঙ্গে পরামর্শ না করেই এই বাঁধ নির্মাণ করছে। তবে যৌথ নদী কমিশনের সদস্য ড. আবুল হোসেনের ২০২৩ সালের ১১ ডিসেম্বর প্রেরিত স্মারক (৪২.০৫.০০০০.০০০.০৬.০৮.১৬.১২৯৪) এবং ভারতের যৌথ নদী কমিশনের সদস্য অতুল জাইনের ২০২৪ সালের ১১ মার্চের স্মারক (Z-১৪০১১/১৮/২০২০/ O/০SJC-(FM)-Mowr/ ৩০৭০) অনুযায়ী উক্ত বাঁধ নির্মাণকাজ বৈধ ছিল এবং যৌথভাবে অনুমোদিত হয়েছিল।

খালেদ বিন ওয়ালিদ আরও জানান, ভারত বাংলাদেশকে এই তিনটি পয়েন্টে কাজ করার অনুমতি দিতে তাদের পাঁচটি পয়েন্টে বাঁধ নির্মাণের অনুমতির শর্ত দিয়েছিল। বাংলাদেশ তাদের পাঁচটি পয়েন্ট পরিদর্শনের আগ্রহ দেখালেও ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে কুলাউড়া সীমান্তের এই তিনটি পয়েন্টের বাঁধ নির্মাণ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।

বাঁধ নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় কুলাউড়ার সীমান্তবর্তী অঞ্চলের বাসিন্দারা উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন। স্থানীয় কৃষক ও বাসিন্দারা দ্রুত সমস্যার সমাধান চায়, যাতে আগাম বন্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের দাবি জানানো হচ্ছে।