সৌদি রুটে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য

টুইট ডেস্ক: সৌদি আরবগামী বাংলাদেশি প্রবাসীরা টিকিট সিন্ডিকেট, কৃত্রিম সংকট, যাত্রী হয়রানি ও অতিরিক্ত চার্জ আদায়ের কারণে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক প্রবাসী এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়া‌রি) হাসনাত আবদুল্লাহ’র ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতিদিন শত শত প্রবাসী তাদের দুঃখ-কষ্টের কথা জানাচ্ছেন।

অভিযোগ রয়েছে, কিছু এজেন্সি সিন্ডিকেট তৈরি করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে এবং সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে।

প্রবাসীদের অভিযোগ: গ্রুপ টিকিটের মূল্যবৃদ্ধি:

আগে সৌদি রুটে গ্রুপ টিকিটের দাম ছিল ৩৫-৪০ হাজার টাকা, কিন্তু এখন সিন্ডিকেটের কারণে প্রতিটি টিকিট ৮০-৯০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

ফ্লাইট সংখ্যা হ্রাস:

আগে প্রতি সপ্তাহে ৯৮টি ফ্লাইট চললেও, এখন তা কমিয়ে মাত্র ৪৪টি করা হয়েছে। এতে টিকিট সংকট তীব্র হয়েছে।

কৃত্রিম সংকট তৈরি:

কিছু এজেন্সি আগাম বিনিয়োগ করে ৪-৫টি এজেন্সির মাধ্যমে গ্রুপ টিকিট ব্লক করে রাখছে, ফলে সাধারণ যাত্রীরা টিকিট পাচ্ছেন না।

ব্ল্যাঙ্ক সিট দেখিয়ে প্রতারণা:

অনেক ফ্লাইটে আসন খালি থাকলেও তা ব্ল্যাঙ্ক সিট দেখিয়ে সংকট সৃষ্টি করা হচ্ছে, যাতে যাত্রীরা বেশি দামে টিকিট কিনতে বাধ্য হন।

এয়ারপোর্টে যাত্রী হয়রানি:

বিভিন্ন অজুহাতে যাত্রীদের হয়রানি করা হচ্ছে এবং তাদের ফ্লাইট মিস করানো হচ্ছে। পরবর্তী ফ্লাইটে উঠতে হলে যাত্রীদের ১ থেকে ১.২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত গুণতে হচ্ছে।

ম্যানপাওয়ার ভিসায় দুর্নীতি:

BMET (বাংলাদেশ ম্যানপাওয়ার, এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং ব্যুরো) অজানা কারণে ম্যানপাওয়ার ভিসা আটকে রাখছে, অথচ সৌদি দূতাবাস জানিয়েছে, তারা এ বিষয়ে অবগত নয়।

অতিরিক্ত চার্জ ও দুর্নীতি:

কিছু এজেন্সি এবং BMET-এর অসাধু কর্মকর্তারা প্রতি ম্যানপাওয়ার ভিসার জন্য ১০-১৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত আদায় করছে, যা প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার দুর্নীতিতে পরিণত হয়েছে।

প্রবাসীদের দাবি: জরুরি পদক্ষেপ প্রয়োজন

প্রবাসীরা দ্রুত এই সিন্ডিকেট ভেঙে ফেলার দাবি জানিয়েছেন। বিশেষ করে বিমানবন্দর ও ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর কার্যক্রমের ওপর কঠোর নজরদারি এবং টিকিটের স্বচ্ছ বণ্টন নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

সরকারি সংস্থাগুলো যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে প্রবাসী কর্মীরা আরও বড় সংকটের মুখে পড়তে পারেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।

হাসনাত আবদুল্লাহ হলেন একজন বাংলাদেশী ছাত্রনেতা ও ২০২৪ কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন নেতা। বর্তমানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।