শাশুড়িসহ সাবেক প্রতিমন্ত্রী পলকের সম্পদ জব্দের আদেশ

টু‌ইট ডেস্ক: সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগরের সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত কঠোর আদেশ জারি করেছে।

আদেশমতে, পলকের ১ কোটি ৯৫ লাখ ৪৫ হাজার ৯৬৬ টাকার ১৫ দশমিক ১৫ একর জমি জব্দ করা হয়েছে এবং তাঁর নামে থাকা সম্পদের ওপর আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

আদালতের আদেশ অনুযায়ী,
– পলকের নামে ১২টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে,
– তাঁর ছেলের নামে ২টি ব্যাংক হিসাব,
– তার শাশুড়ির নামে ৪টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে। মোট ১৮টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৪ কোটি ৭০ লাখ ৭৯ হাজার ৯৩৭ টাকার অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করা হয়েছে।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) আদালত এই আদেশ জারি করে জানান, সাবেক এমপি ও সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য অনুসন্ধানে সন্দেহভাজন কর্মকান্ডের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পলকের নামে থাকা সম্পদ অন্যত্র স্থানান্তর, হস্তান্তর বা মালিকানা পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য, পলকের অর্জিত সম্পদ অবরুদ্ধ করা আবশ্যক বলে দাবী করা হয়।

পলকের স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে মোট ১৫ দশমিক ১৫ একর জমি, যার বিস্তারিত;
– নাটোরের সিংড়া উপজেলায় মোট ১৪ দশমিক ৯৮৫ একর জমি,
– এই জমির সাথে সংযুক্ত রয়েছে ২টি বিল্ডিং ও ৪টি দোকান।

এছাড়াও, পলকের ছেলের নামে রয়েছে ৬ শতক জমি, যার মূল্য ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৩৬৫ টাকা এবং পূর্বাচলে ১০ কাঠা জমি রয়েছে যার মূল্য ৩৫ লাখ টাকা।

আদালতের আদেশ অনুসারে পলকের অস্থাবর সম্পদ হিসাবে নিম্নলিখিত ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে:

– পলকের ১২টি ব্যাংক হিসাব মোট অবরুদ্ধ সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ২ কোটি ৩১ লাখ ৭৩ হাজার ৬১৭ টাকা।

– তাঁর ছেলের ২টি ব্যাংক হিসাব, মোট অবরুদ্ধ সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫৫ লাখ ৩৭ হাজার ১১৭ টাকা।

– তাঁর শাশুড়ি (লাইলা জেসমিন) এর ৪টি ব্যাংক হিসাব মোট অবরুদ্ধ সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ কোটি ৮৩ লাখ ২০৩ টাকা।

এই ১৮টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে অবরুদ্ধ সম্পদের সমষ্টিগত মূল্য দাঁড়ায় ৪ কোটি ৭০ লাখ ৭৯ হাজার ৯৩৭ টাকা।

আদালতের এই আদেশ সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, সম্পদ হস্তান্তর এবং মালিকানা পরিবর্তনের সম্ভাবনা প্রতিরোধে তাত্ক্ষণিক পদক্ষেপ হিসেবে নেওয়া হয়েছে। তদন্ত ও বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার পূর্বে, সন্দেহভাজন ব্যক্তির অর্জিত সম্পদ লুকিয়ে রাখতে এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এই আদেশের মাধ্যমে প্রশাসনিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর লড়াই চালানোর পাশাপাশি, সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার আশা প্রকাশ করা হচ্ছে।