স্বামীসহ সাবেক মন্ত্রী ডা. দীপু মনির বিরুদ্ধে ৬৯ কোটি টাকার দুদকের মামলা
- ৮ কোটি ৮৮ লাখ ৪১ হাজার ৭৩৫ টাকা (জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ)
- ৫৯ কোটি ৭৯ লাখ ৯২ হাজার ৭৩১ টাকা (সন্দেহজনক লেনদেনসহ ব্যাংক কার্যক্রম)
- সর্বমোট: ৬৮ কোটি ৬৮ লাখ ৩৪ হাজার ৪৬৬ টাকা
টুইট ডেস্ক: দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং তার স্বামী বিশিষ্ট আইনজীবী তাওফিক নেওয়াজের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সন্দেহজনক ব্যাংকিং লেনদেনের অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে। এই মামলাগুলো দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলমান অভিযানের অংশ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন সমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তার বক্তব্য অনুযায়ী, ডা. দীপু মনি পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৯২ লাখ ২ হাজার ৫৩০ টাকার জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। পাশাপাশি, তার নিজ নামে পরিচালিত বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৩১ কোটি ৯ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকা জমা এবং ২৮ কোটি ৭০ লাখ ৫৫ হাজার ১১৫ টাকা উত্তোলনসহ মোট ৫৯ কোটি ৭৯ লাখ ৯২ হাজার ৭৩১ টাকা সন্দেহজনকভাবে লেনদেন করেছেন।
এই অপরাধের ভিত্তিতে দুদক, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অন্যদিকে, তার স্বামী তাওফিক নেওয়াজের বিরুদ্ধে অভিযোগ হচ্ছে, তিনি স্ত্রী দীপু মনির ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত ১ কোটি ৯৬ লাখ ৩৯ হাজার ২০৫ টাকার জ্ঞাত আয়ের উৎস-বহির্ভূত সম্পদ নিজের দখলে রেখেছেন। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে, দুদক একই ধারায় তার বিরুদ্ধেও পৃথক মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ডা. দীপু মনি একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ এবং আওয়ামী লীগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা। তিনি দীর্ঘদিন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন এবং পরে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তবে কিছু মহল এটিকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ হিসেবেও দেখলেও বিগত সরকারের আমলে দেশ বিশ্বে করেকবার দুর্নীতিতে শিরোপা অর্জন করেছে।
প্রশ্ন উঠছে, এই মামলাগুলো কি শুধুমাত্র আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা, নাকি এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য লুকিয়ে আছে?
এই মামলাগুলো দেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থায় গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। তবে সত্য উদ্ঘাটন এবং সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করার জন্য স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন। বিচারিক প্রক্রিয়া কীভাবে পরিচালিত হয় এবং এর ফলাফল কী হয়, তা ভবিষ্যতে বাংলাদেশে দুর্নীতিবিরোধী লড়াইয়ের গতিপথ নির্ধারণ করবে।