ভারতের মণিপুরে জাতিগত সহিংসতার জেরে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ
অনাস্থা প্রস্তাবের আগেই সরে দাঁড়ালেন এন বীরেন সিং
বিশ্ব ডেস্ক: ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং পদত্যাগ করেছেন। রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) তিনি রাজ্যপাল অজয়কুমার ভাল্লার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন।
গত দুই বছর ধরে রাজ্যে চলমান জাতিগত সংঘর্ষে অন্তত ২৫০ জন নিহত হওয়ার পর, সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার কারণে তিনি এই সিদ্ধান্ত নেন। বিরোধী দল কংগ্রেস তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার পরিকল্পনা করেছিল, যা সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিধানসভায় উপস্থাপিত হওয়ার কথা ছিল। এর আগেই তিনি পদত্যাগ করেন।
মণিপুরে মেইতেই এবং কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে অর্থনৈতিক সুবিধা ও চাকরির কোটাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ চলছে, যা প্রায় ৬০,০০০ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে।
বীরেন সিং মেইতেই সম্প্রদায়ের হওয়ায়, কুকি গোষ্ঠীগুলো তার বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছে এবং তার অপসারণের দাবি জানিয়ে আসছে। এছাড়া, তার নিজের দলের সদস্যরাও তার পদত্যাগের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। গত নভেম্বরে, বিজেপির প্রধান মিত্র ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) রাজ্যের শাসক জোট থেকে সরে আসে, বীরেন সিংয়ের সংকট সমাধানে ব্যর্থতার অভিযোগে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, রবিবার সকালে নয়াদিল্লিতে অমিত শাহ এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জেপি নাড্ডার সঙ্গে দেখা করেন বীরেন সিং। সঙ্গে ছিলেন বিজেপি ও নাগা পিপল্স ফ্রন্ট (এনপিএফ)-এর ১৪ জন বিধায়ক। মাত্র ১৫ মিনিটের বৈঠকের পর ইম্ফলে ফিরেই বীরেন ইস্তফা দেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে।
গত প্রায় দেড় বছর ধরে অশান্ত পরিস্থিতিতে রয়েছে মণিপুর। ২০২৩ সালের মে মাসে প্রথম মেইতেই এবং কুকি-জো সম্প্রদায়ের সহিংস আন্দোলন ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এ রাজ্য। গত বছরের সেপ্টেম্বরে মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে মণিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে। মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি রাজ্যের বেশ কয়েক জন বিধায়কের বাড়িতেও হামলা চালানো হয়।
পদত্যাগপত্রে বীরেন সিং কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং মণিপুরের আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা, সীমান্তে অনুপ্রবেশ নিয়ন্ত্রণ ও অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর জন্য অব্যাহত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।