“হাসিনাকে থামান”: দিল্লিকে ঢাকার কড়া বার্তা

  • হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্য বন্ধে ভারতের প্রতি আহ্বান
  • ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করল ঢাকা

টুইট ডেস্ক: ভারতে পলাতক শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক উসকানিমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত ভারতীয় হাইকমিশনার পবন বাধেকে বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকার দিল্লির প্রতি কড়া বার্তা দিয়ে বলেছে, “আপনারা শেখ হাসিনাকে থামান। তিনি অব্যাহতভাবে মিথ্যা ও উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন।”

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ভারতের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ শেখ হাসিনা ভারত থেকে নির্বাসিত অবস্থায় থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করছেন, যা উসকানিমূলক এবং অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসনে বলেন, “ভারতকে আমরা লিখিতভাবে অনুরোধ করেছি, শেখ হাসিনাকে সংযত করতে। তিনি যেন এমন বক্তব্য না দেন যা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করতে পারে। কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক জবাব পাইনি। গত কয়েকদিনের কার্যকলাপের কারণে আজ আবারও আমরা তাদের একটি প্রতিবাদ নোট দিয়েছি।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন এবং তারা কোনো বহিরাগত উসকানিতে বিভ্রান্ত হবে না। তবে সরকার দৃঢ় অবস্থানে থেকে নিশ্চিত করতে চায় যে, কোনো বিদেশি মাটিকে ব্যবহার করে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করা যাবে না।”

ঢাকা মনে করছে, শেখ হাসিনাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে দিল্লির করণীয় রয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের মতে, যেহেতু শেখ হাসিনা ভারতের মাটিতে অবস্থান করছেন, তাই দিল্লির উচিত তাকে এ ধরনের রাজনৈতিক উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত রাখা।

বিশ্লেষকদের মতে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের এবং উভয় দেশই আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আগ্রহী। এ অবস্থায় শেখ হাসিনার বক্তব্য যদি ভারতের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সমর্থন পেয়ে থাকে, তাহলে তা দুই দেশের সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

শেখ হাসিনা এর আগেও বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় বক্তব্য দিয়েছেন। তবে সাম্প্রতিক বক্তব্যগুলো জনগণের আবেগের ওপর সরাসরি আঘাত হেনেছে, বিশেষ করে জুলাই অভ্যুত্থানের শহিদদের নিয়ে তার মন্তব্য জনমনে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকার বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলে উত্থাপন করার কথাও বিবেচনা করছে। সরকার দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় আঞ্চলিক সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ, এবং কোনো দেশ যেন বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের আশ্রয়স্থল না হয়।

বিশ্লেষকদের মতে, শেখ হাসিনার বক্তব্য এবং তার রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের কঠোর অবস্থান ভবিষ্যতে আরও স্পষ্ট হতে পারে। ভারত যদি এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন উত্তেজনা তৈরি হতে পারে।