মুক্তিযোদ্ধাদের ডেটাবেইস তৈরিতে অনিয়ম: দুদকের মামলা
অনিয়মের ঘটনায় সরাসরি ক্ষতির পরিমাণ ৭৪ লাখ ৩৬ হাজার ৭৫০ টাকা, তবে পুরো প্রকল্পের অর্থের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।
টুইট ডেস্ক: মুক্তিযোদ্ধাদের ডেটাবেইস তৈরি এবং গণ-উদ্বুদ্ধকরণ শীর্ষক কর্মসূচিতে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক উপসচিব সৈয়দ মুজিবুল হকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের দায়ের করা মামলার অন্য দুই আসামি হলেন—জাপান-বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং অ্যান্ড পেপার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. জাহিদ হোসেন এবং প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. সেলিম প্রধান।
দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন আজ মঙ্গলবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪৬৮, ৪৭১, ১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় মামলা করা হয়েছে।
দুদকের অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামিরা বিধিবহির্ভূতভাবে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রায় ৭৪ লাখ ৩৬ হাজার ৭৫০ টাকা বিল পরিশোধের মাধ্যমে সরকারের আর্থিক ক্ষতি করেছেন।
সৈয়দ মুজিবুল হক ছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের ডেটাবেইস তৈরি এবং গণ-উদ্বুদ্ধকরণ শীর্ষক কর্মসূচির পরিচালক ও ৬৪টি জেলার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক। এই কর্মসূচির আওতায় মুক্তিযোদ্ধাদের সার্টিফিকেট ডিজিটাল পদ্ধতিতে ছাপানো, ডেটাবেইস তৈরি, সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার ক্রয়ের জন্য মোট ১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল।
টেন্ডার মূল্যায়ন কমিটি এবং কারিগরি ও আর্থিক মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে জাপান-বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং অ্যান্ড পেপার্স লিমিটেডকে ১ কোটি ৮২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৪০ টাকায় কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। তবে, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠির জবাবে দেখা যায়, সার্টিফিকেট সরবরাহ বা গ্রহণের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
তবুও, তৎকালীন কর্মসূচি পরিচালক সৈয়দ মুজিবুল হক ৯০ হাজার সার্টিফিকেট এবং হার্ডওয়্যার যন্ত্রপাতি গ্রহণের মিথ্যা প্রত্যয়ন প্রদান করেন।
এর ভিত্তিতে তিনি আংশিক সরবরাহ বিল বাবদ ৯৮ লাখ টাকার অর্থ মঞ্জুর করেন এবং সেখান থেকে ৭৪ লাখ ৩৬ হাজার ৭৫০ টাকা ভ্যাট/ট্যাক্স হিসেবে পরিশোধ করা হয়।
দুদক জানায়, সৈয়দ মুজিবুল হক ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রকৃতপক্ষে সরবরাহকৃত মালামাল গ্রহণ না করেই বিল মঞ্জুর করেছেন। এভাবে সরকারি অর্থের অপচয় ও আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় সহযোগিতার অভিযোগে জাপান-বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং অ্যান্ড পেপার্স লিমিটেডের এমডি মো. জাহিদ হোসেন এবং চেয়ারম্যান মো. সেলিম প্রধানকে আসামি করা হয়েছে।