বিবি’র কর্মকর্তাদের রক্ষিত লকার ফ্রিজ করতে দুদকের চিঠি
টুইট ডেস্ক: বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা ভল্টে রক্ষিত কর্মকর্তাদের সেইফ ডিপোজিট সাময়িকভাবে স্থগিত (ফ্রিজ) করার জন্য চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এর ফলে কেউ যাতে ওই লকার খুলে রক্ষিত মালামাল নিতে না পারে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন আজ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
মহাপরিচালক আক্তার হোসেন জানান, গত ২৬ জানুয়ারি আদালতের অনুমতিক্রমে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দুদকের একটি অনুসন্ধানী টিম বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েন ভল্টে তল্লাশি চালায়। এই অভিযানে সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর সেইফ ডিপোজিট বাক্স খোলা হয়।
তল্লাশির সময় সিলগালা করা তিনটি কোটা থেকে উদ্ধার করা হয়, ৫৫ হাজার ইউরো, ১ লাখ ৬৯ হাজার ৩০০ মার্কিন ডলার, ১০০৫.৪ গ্রাম স্বর্ণ, ৭০ লাখ টাকার এফডিআর (ফিক্সড ডিপোজিট রসিদ)। এই গুরুত্বপূর্ণ উদ্ধার দুদকের অনুসন্ধানকে আরও জোরদার করেছে।
আক্তার হোসেন আরও জানান, তল্লাশিকালে রেজিস্ট্রার পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যান্য কর্মকর্তাদেরও একই ধরনের লকার রয়েছে। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে প্রতীয়মান হয়েছে যে, এই লকারগুলোরও তল্লাশি প্রয়োজন।
এজন্য অনুসন্ধানকারী দল বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়ে এই লকারগুলো সাময়িকভাবে স্থগিত (ফ্রিজ) করার অনুরোধ জানিয়েছে। পরবর্তীতে আদালতের অনুমতিক্রমে এই লকারগুলো তল্লাশি করা হবে।
দুদক জানিয়েছে, এই অনুসন্ধান প্রক্রিয়া চলমান থাকবে এবং প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এই উদ্যোগ দুর্নীতি দমনে কমিশনের দৃঢ় অবস্থানকে স্পষ্ট করে।
দুদক মহাপরিচালক বলেন, “আমরা সবার জন্যই সমানভাবে আইন প্রয়োগ করতে বদ্ধপরিকর। যে কোনো দুর্নীতির অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”
এই ঘটনাটি ব্যাংকিং খাত এবং সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার গুরুত্ব বাড়িয়ে তুলেছে। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধরনের উদ্যোগ ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংক দুদকের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।