জয়-পুতুলেন সিআরআই অফিস নেই, সাড়ে ৩৫ কোটি টাকার উৎসের খোঁজে দুদক
সিআরআই-এর চেয়ারম্যান সজীব আহমেদ ওয়াজেদ (জয়), ভাইস-চেয়ারম্যান সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, এবং ট্রাস্টিদের মধ্যে আছেন রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও নসরুল হামিদ।”
টুইট ডেস্ক: দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) অফিস খুঁজতে গিয়ে কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে দুদকের একটি টিম ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এবং ৬/এ এলাকায় অভিযান চালায়। তবে উভয় স্থানে সিআরআই-এর কোনো অফিসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।
আইএফআইসি ব্যাংকে সিআরআই-এর নামে ৩৫ কোটি ২১ লাখ টাকার একটি ফিক্সড ডিপোজিট রিসিপ্ট (এফডিআর) রয়েছে। এছাড়াও সোনালী ব্যাংকের লেনদেনের রেকর্ড পাওয়া গেছে।
দুদকের সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদ অভিযান শেষে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, “রাষ্ট্রীয় অর্থ প্রাতিষ্ঠানিক কাজে ব্যয় বা কোনো ধরনের ক্ষতি সাধন করা হয়েছে কিনা, সেটি যাচাই করার জন্য এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। আমরা প্রাথমিকভাবে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছি এবং সেই পরিপ্রেক্ষিতেই এখানে এসেছি।”
তিনি আরও জানান, “অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা সিআরআই-এর ব্যাংক হিসাব থাকার তথ্য পেয়েছি। সেই তথ্য যাচাই করতে আমাদের রেকর্ড সংগ্রহ করতে হবে। ব্যাংক স্টেটমেন্ট সংগ্রহের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি নন-প্রফিট অর্গানাইজেশন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে, তাই তার আর্থিক লেনদেনের স্বচ্ছতা যাচাই করা জরুরি।”
অভিযানের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, “দুদক নিয়মিত যেসব অভিযান পরিচালনা করে, এটি তারই অংশ। যেসব তথ্য ও অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে, সেগুলো যাচাই করার জন্যই আজকের অভিযান পরিচালিত হয়েছে।”
অভিযোগের পটভূমি:সিআরআই-এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় অর্থের অপব্যবহার এবং আর্থিক স্বচ্ছতা নিয়ে কিছু অভিযোগ উঠেছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই দুদক তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে। যদিও সিআরআই-এর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
আর্থিক লেনদেনের তথ্য:অভিযানের সময় দুদক দল ডাচ-বাংলা ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক এবং সোনালী ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সিআরআই-এর ব্যাংকিং রেকর্ড সংগ্রহ করে। প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আইএফআইসি ব্যাংকে সিআরআই-এর নামে ৩৫ কোটি ২১ লাখ টাকার একটি ফিক্সড ডিপোজিট রিসিপ্ট (এফডিআর) রয়েছে। এছাড়াও সোনালী ব্যাংকের লেনদেনের রেকর্ড পাওয়া গেছে।
দুদক মহাপরিচালক আখতার হোসেন সাংবাদিকদের জানান, “সিআরআই-এর পরিচালনা পর্ষদ বিভিন্ন রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য রাষ্ট্রীয় তহবিলের অপব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এর ভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “তদন্তের সময় নথিপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, সিআরআই-এর চেয়ারম্যান সজীব আহমেদ ওয়াজেদ (জয়), ভাইস-চেয়ারম্যান সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, এবং ট্রাস্টিদের মধ্যে আছেন রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও নসরুল হামিদ।”
পরবর্তী পদক্ষেপ:দুদক জানিয়েছে, এই অভিযানের ফলাফল পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ব্যাংক স্টেটমেন্ট ও অন্যান্য আর্থিক নথি সংগ্রহ শেষে প্রয়োজনীয় অনুসন্ধান অব্যাহত থাকবে।