“ফ্যাসিজম ও হঠকারিতা কারো জন্য কল্যাণকর নয়”: জামায়াত আমীর
হাফেজা আসমা খাতুনের স্মরণসভায় জামায়াত আমীর
টুইট ডেস্ক: জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, হঠকারিতা ও ফ্যাসিজম দুনিয়া ও আখিরাতে কারো জন্য কল্যাণকর নয়।
তিনি বলেন, “একটি সময় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছিল, যখন আপনজনকে বিদায় জানানো, দোয়া করা বা শেষ দেখা করাও সম্ভব ছিল না। এমন পরিবেশ যেন আর ফিরে না আসে। আমি দোয়া করি, সেই দুঃস্বপ্নের সময়গুলো থেকে জাতি শিক্ষা নিক এবং একই পথে আর যেন কেউ পা না বাড়ায়।”
শুক্রবার সকালে রাজধানীর মগবাজারের আল ফালাহ মিলনায়তনে সাবেক এমপি ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় মহিলা বিভাগের সাবেক সেক্রেটারি হাফেজা আসমা খাতুনের স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াত আমীর বলেন, “আল্লাহ উত্তরাধিকার সূত্রে ও বৈবাহিক সূত্রে দুটি ধারা সৃষ্টি করেছেন। এর বাইরে রুহানিয়াতের আরেকটি ধারা সৃষ্টি করেছেন, তবে রক্তের ঊর্ধ্বে ঈমানের সম্পর্ক।”
তিনি আরও বলেন, “যারা আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছাকে সম্মান করবে না, তাগুত ও নফসের তাড়নায় চলবে, তাদের জেনে রাখা উচিত যে, আল্লাহ অত্যন্ত কঠিন।”
ডা. শফিকুর রহমান স্মৃতিচারণ করে বলেন, “হাফেজা আসমা খাতুন আন্তরিক ও নিষ্ঠাবান ছিলেন। তিনি যা বিশ্বাস করেছেন, তা-ই বলেছেন এবং করেছেন। তিনি যে সময়ে সংগঠনের হাল ধরেছিলেন, সে সময় তিনিই একমাত্র ব্যক্তি ছিলেন, যিনি এ দায়িত্ব গ্রহণের যোগ্যতা রাখতেন। মাত্র ১০ জনকে নিয়ে কেন্দ্রীয় সংগঠনের কাজ শুরু করেছিলেন, যা আজ ৪৩ হাজারে পৌঁছেছে। আমার বিশ্বাস, এমন কেউ নেই, যিনি তাকে শ্রদ্ধা করেন না।”
তিনি বলেন, “উত্তম কর্ম মানুষকে স্মরণীয় করে রাখে। আমলদার মানুষ যখন কারো জন্য দোয়া করে, তখন আল্লাহ তা হৃদয়ের গভীরে পৌঁছে দেন। কিন্তু চতুর ব্যক্তি যখন অনেক গুছিয়ে কথা বলে, তখন তা কোনো প্রভাব ফেলে না।”
হাফেজা আসমা খাতুন সম্পর্কে তিনি বলেন, “তিনি একজন আদর্শ মা, ভাগ্যবতী স্ত্রী, আদর্শ বোন ও লক্ষ লক্ষ মানুষের অনুপ্রেরণা ছিলেন। তার পরিবারের প্রতিটি সদস্য আল্লাহর দাওয়াতের জন্য নিবেদিত—এটি বিরল উদাহরণ।
পরিবারের দুর্ভোগের কথা উল্লেখ করে জামায়াত আমীর বলেন, “তিনি মজলুম পরিবারের সদস্য ছিলেন। মৃত্যুর সময় তার সন্তানরা দেশে ফিরে আসার সুযোগ পাননি। এমনকি, এই শহরে থেকেও পরিস্থিতির কারণে অনেকে তার জানাজায় শরিক হতে পারেননি। এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক।”
মরহুমার মাগফিরাত কামনা করে জামায়াত আমীর বলেন, “আল্লাহ তাকে কোরআনের দা’ঈ হিসেবে কবুল করুন।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মরহুমার বড় ছেলে নিয়াজ মাখদুম এবং সঞ্চালনায় ছিলেন ছোট ছেলে, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সাইফুল্লাহ মানছুর।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন—
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নুরুল ইসলাম বুলবুল
কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার, ড. মামুন আল আযমী, হেমায়েত হোসেন ও ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন প্রমুখ।
স্মরণসভায় উপস্থিত নেতৃবৃন্দ মরহুমার অবদান ও ত্যাগের কথা স্মরণ করেন এবং তার রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।