আ.লীগের বিক্ষোভ নিষিদ্ধ, সাহস করলে আইনের মুখোমুখি: প্রেস সচিব
টুইট ডেস্ক: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে কোনো ন্যায্য বিক্ষোভ বন্ধ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তবে গণহত্যা, হত্যাকাণ্ড ও দুর্নীতির জন্য ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে বিক্ষোভ করার অনুমতি দেওয়া হবে না বলে তিনি কঠোর বার্তা দিয়েছেন।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ কথা জানান। শফিকুল আলম বলেন, “আমরা সমাবেশ করার স্বাধীনতা এবং সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। তবে আওয়ামী লীগ যদি কোনো অবৈধ বিক্ষোভ করার চেষ্টা করে, তাদের আইনের মুখোমুখি হতে হবে।”
তিনি উল্লেখ করেন, গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সাড়ে পাঁচ মাসে ঢাকায় কমপক্ষে ১৩৬টি বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর ফলে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হলেও সরকার কখনো বিক্ষোভের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেনি। তবে আওয়ামী লীগের ইতিহাস বিবেচনায় তাদের বিক্ষোভ করার সুযোগ দেওয়ার প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
শফিকুল আলম বলেন, “জুলাই-আগস্টের ভিডিও ফুটেজে স্পষ্ট দেখা যায় আওয়ামী লীগের কর্মীরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের হত্যার সঙ্গে যুক্ত ছিল। তাদের অপরাধে প্রাণ হারিয়েছেন শত শত তরুণ-তরুণী এবং শিশু। এসব কর্মকাণ্ডের জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দলটিকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিশেষ করে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার শাসনামলে সরাসরি হত্যাকাণ্ড, জোরপূর্বক গুম এবং দুর্নীতির আদেশ দেওয়া হয়েছিল।
একটি স্বাধীন তদন্ত প্যানেলের রিপোর্ট অনুযায়ী, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে। এছাড়াও তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, “আমরা কোনো খুনি বা দুর্নীতিবাজ গোষ্ঠীকে প্রতিবাদ বা বিক্ষোভ করার সুযোগ দিতে পারি না। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যদি সত্যিকারের পরিবর্তন চায়, তাহলে তাদের বর্তমান নেতৃত্ব ও ফ্যাসিবাদী আদর্শ থেকে বের হয়ে এসে নিজেদের পাপমোচনের জন্য আইনের আশ্রয় নিতে হবে।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “যতক্ষণ না আওয়ামী লীগ তাদের অন্যায়ের জন্য ক্ষমা চায় এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের কোনো বিক্ষোভ বা সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগের পতাকাতলে কেউ যদি অবৈধ বিক্ষোভের সাহস করে, তাকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “মিত্রবাহিনী কি কখনও নাৎসিদের বিক্ষোভ করার অনুমতি দিয়েছিল? পৃথিবীর কোনো দেশই একদল খুনি এবং দুর্নীতিবাজ চক্রকে জবাবদিহিতা ছাড়া কার্যক্রমে ফেরার অনুমতি দেয় না। বাংলাদেশের জনগণ এই ধরনের অন্যায় কোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কঠিন প্রতিক্রিয়া জানাবে।”
সুতরাং, গণতন্ত্র এবং ন্যায্যতার পক্ষে অবস্থান নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন তিনি।