ফেডারেল অনুদান ও ঋণ স্থগিতের নির্দেশনা দিলেন ট্রাম্প

বিশ্ব ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফেডারেল অনুদান ও ঋণ স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছেন। এর ফলে দেশজুড়ে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্ত সরকারি সহায়তার ওপর নির্ভরশীল বিভিন্ন কর্মসূচি ও প্রতিষ্ঠানকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, স্থানীয় সময় সোমবার (২৭ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেটের (ওএমবি) ভারপ্রাপ্ত প্রধান ম্যাথিউ ভেথ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

কেন স্থগিত করা হলো অনুদান ও ঋণ?

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রেসিডেন্টের নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে ফেডারেল অর্থায়ন পর্যালোচনার অংশ হিসেবে এই স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের ভাষ্য, যেসব নীতি তার এজেন্ডার বিরোধী, সেগুলোতে ফেডারেল অর্থ ব্যয় করা করদাতাদের অর্থের অপচয়।

এ নির্দেশনার ফলে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ও বিদেশি সহায়তার ওপর নির্ভরশীল প্রকল্প অর্থায়ন হারাবে। তবে সামাজিক নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা, খাদ্য সহায়তা ও প্রতিবন্ধী ভাতা এ নির্দেশনার আওতার বাইরে থাকবে।

ওএমবি জানিয়েছে, ২০২৪ অর্থবছরে ফেডারেল সরকার প্রায় ১০ ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। এর মধ্যে তিন ট্রিলিয়নের বেশি অর্থ অনুদান ও ঋণ হিসেবে দেওয়া হয়েছে।

তবে কংগ্রেসনাল বাজেট অফিস (সিবিও) জানিয়েছে, সরকারি ব্যয়ের পরিমাণ ৬.৭৫ ট্রিলিয়ন ডলার। এ দুটি হিসাবের মধ্যে পার্থক্য থাকায় স্পষ্টতা আনতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

ডেমোক্র্যাটদের প্রতিক্রিয়া

ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্ত নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ডেমোক্র্যাট নেতারা। সিনেটর প্যাটি মারে ও কংগ্রেসম্যান রোজ ডিলাউরো এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, “কংগ্রেস অনুমোদিত অর্থ আটকে দেওয়া সংবিধান লঙ্ঘনের শামিল।” তারা এ সিদ্ধান্তকে ‘শ্বাসরুদ্ধকর ও অভূতপূর্ব’ বলে উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশের জন্য এর প্রভাব কী?

বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগিতা ও অনুদানের অন্যতম গ্রহণকারী দেশ। ট্রাম্প প্রশাসনের এই নির্দেশনার ফলে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এনজিওগুলোর মাধ্যমে পরিচালিত প্রকল্পগুলোতে প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষ করে, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও দারিদ্র্য বিমোচন কার্যক্রমে যুক্তরাষ্ট্রের অনুদান বন্ধ হলে বাংলাদেশে কিছু উন্নয়ন প্রকল্পে সংকট দেখা দিতে পারে।

তবে দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এ নির্দেশনার তেমন প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও উন্নয়ন সহযোগীরা কী পদক্ষেপ নেবে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।