বিশ্ব ইজতেমায় মুসল্লিদের যাতায়াতে ডিএমপির ১৩ নির্দেশনা

টুইট ডেস্ক: আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় জমায়েত, বিশ্ব ইজতেমা-২০২৫ অনুষ্ঠিত হবে। এই আয়োজনে দেশ-বিদেশ থেকে লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অংশগ্রহণ করবেন।

বিশ্ব ইজতেমা এবং আখেরি মোনাজাত (২ ও ৫ ফেব্রুয়ারি) উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) মুসল্লিদের যাতায়াত সহজ ও নিরাপদ করার জন্য বিশেষ নির্দেশনা জারি করেছে।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) তালেবুর রহমানের সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই নির্দেশনা প্রকাশ করা হয়। এতে যানবাহন চলাচলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

১৩টি নির্দেশনা:

১. আন্তঃজেলা যানবাহন চলাচল:
আখেরি মোনাজাতের দিন (২ ও ৫ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৪টা থেকে আন্তঃজেলা বাস, ট্রাক, কার্ভাডভ্যানসহ ভারী যানবাহন আব্দুল্লাহপুর, ধউড় ব্রিজ মোড় পরিহার করে মহাখালী-বিজয় সরণি-গাবতলী হয়ে চলাচল করবে।

২. উত্তরবঙ্গ থেকে আসা যানবাহন:
নবীনগর, বাইপাইল ও আশুলিয়া হয়ে উত্তরবঙ্গ থেকে আসা যানবাহনগুলো কামারপাড়া বা আব্দুল্লাহপুর ক্রসিং পরিহার করে সাভার, গাবতলী দিয়ে চলাচল করবে অথবা ধউড় ব্রিজ ক্রসিং হয়ে মিরপুর বেড়িবাঁধ দিয়ে চলাচল করবে।

৩. ঢাকা থেকে এয়ারপোর্ট রোড:
ঢাকা থেকে এয়ারপোর্ট রোড দিয়ে আগত যানবাহনগুলো কুড়িল ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে প্রগতি সরণি হয়ে অথবা বিশ্বরোড ক্রসিং (নিকুঞ্জ-১ ক্যাচি গেট) দিয়ে ইউটার্ন করে চলাচল করবে।

৪. ফ্লাইওভার ব্যবহার:
আখেরি মোনাজাতের দিন (২ ও ৫ ফেব্রুয়ারি) ৩০০ ফিট দিয়ে আগত যানবাহন কুড়িল ফ্লাইওভার লুপ-২ (এয়ারপোর্টগামী) পরিহার করে প্রগতি সরণি এবং কুড়িল ফ্লাইওভার লুপ-৪ (কাকলী মহাখালীগামী) ব্যবহার করবেন। বিমানবন্দর সড়ক ব্যবহার নিষিদ্ধ।

৫. ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে:
আখেরি মোনাজাতের দিন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাওলা বা এয়ারপোর্টগামী এক্সিট পরিহার করা হবে।

৬. বিমানবন্দর সড়ক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা:
উত্তরা বাসিন্দা, বিমানযাত্রী, বিমান ক্রু, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স ব্যতীত অন্য সব যানবাহন বিমানবন্দর সড়ক পরিহার করবে এবং বিকল্প হিসেবে মহাখালী-বিজয় সরণি-গাবতলী সড়ক ব্যবহার করবে।

৭. পায়ে হেঁটে ইজতেমাস্থলে যাতায়াত:
ঢাকা মহানগরী থেকে যে মুসল্লিরা পায়ে হেঁটে ইজতেমাস্থলে যাবেন, তাদের তুরাগ নদীর ওপরে নির্মিত পল্টুন ব্রিজ অথবা কামাড়পাড়া ব্রিজ দিয়ে টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে যাতায়াত করতে হবে।

৮. বিদেশগামী যাত্রীদের পরিবহন:
বিদেশগামী যাত্রীদের আনা-নেওয়ার জন্য আখেরি মোনাজাতের দিন পদ্মা ইউলুপ এবং কুড়াতলী লুপ-২ থেকে উত্তরা বিভাগের ব্যবস্থাপনায় পরিবহন সেবা প্রদান করা হবে।

৯. পার্কিং ব্যবস্থা:
নির্ধারিত পার্কিং স্থানে মুসল্লীবাহী যানবাহন পার্কিংয়ের সময় অবশ্যই গাড়ির চালক বা হেলপার গাড়িতে অবস্থান করবেন এবং তাদের মোবাইল নম্বর অপর যাত্রীদের সঙ্গে ভাগ করে নেবেন।

১০. গাড়ির দৃশ্যমান স্থানে চালকের তথ্য:
মুসুল্লীবাহী প্রতিটি যানবাহনের দৃশ্যমান স্থানে চালকের নাম এবং মোবাইল নম্বর থাকলে তা নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সহায়ক হবে।

১১. আব্দুল্লাহপুর বেইলী ব্রিজ:
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে আব্দুল্লাহপুর বেইলী ব্রিজ ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে আজমপুর থেকে ফ্লাইওভার ব্যবহার করতে অনুরোধ করা হয়েছে।

১২. ফ্লাইওভার দিয়ে পারাপার না হওয়া:
জনসাধারণকে পায়ে হেঁটে ফ্লাইওভার দিয়ে পারাপার না হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে, যেন সড়ক দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।

১৩. পার্কিং নিষেধাজ্ঞা:
খিলক্ষেত থেকে আব্দুল্লাপুর হয়ে ধউড় ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তার দুপাশে গাড়ি পার্কিং নিষিদ্ধ।

গাড়ি পার্কিং সংক্রান্ত নির্দেশনা:

ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ:
১৫ নম্বর সেক্টর কদমতলী মার্কেট, ৫ নম্বর ব্রিজ ঢাল ও ১৭ নম্বর সেক্টর উলুদাহ মাঠে পার্কিং।

সিলেট ও খুলনা বিভাগ:
উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টর লেকপাড় মাঠে পার্কিং।

রাজশাহী, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগ:
১০ নম্বর ব্রিজ, ১১ নম্বর ব্রিজ লেকের পশ্চিম পাশে, ১৬ নম্বর সেক্টরের ভিতরে এবং বউবাজার মাঠে পার্কিং।

বরিশাল বিভাগ:
ধউর ব্রিজ ক্রসিংয়ে বিআইডব্লিউটিএ ল্যান্ডিং স্টেশন এলাকায় পার্কিং।

ঢাকা মহানগরী:
৩০০ ফিট রাস্তায় স্বদেশ প্রোপার্টির খালি জায়গায় পার্কিং।

ডাইভারশন পয়েন্টসমূহ:
ডাইভারশন পয়েন্টগুলো শুধুমাত্র আখেরি মোনাজাতের দিন ২ ও ৫ ফেব্রুয়ারি ভোর ৪টা থেকে কার্যকর হবে। এসব পয়েন্টে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রিত থাকবে: ধউর ব্রিজ, ১৮ নম্বর সেক্টর পঞ্চবটা ক্রসিং, পদ্ম ইউলুপ, ১২ নম্বর সেক্টর খালপাড়, মহাখালী ক্রসিং, হোটেল রেডিসন ব্লু ক্রসিং, ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়ে (বিশ্ব রোড নিকুঞ্জ-১ ক্যাচি গেট), কুড়াতলী ফ্লাইওভার লুপ-২, মহাখালী ফ্লাইওভার পশ্চিম পাশ, এবং মিরপুর দিয়াবাড়ী বাসস্ট্যান্ড ক্রসিং।

এমতাবস্থায়, ডিএমপি বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা রক্ষা ও যানজট এড়ানোর জন্য ধর্মপ্রাণ নাগরিকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছে।