সায়মা ওয়াজেদের নিয়োগে বিতর্ক: তদন্তের মুখে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে সায়মা ওয়াজেদের নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক

টুইট ডেস্ক: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে সায়মা ওয়াজেদের নিয়োগ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আত্মীয়করণের অভিযোগ উঠেছে, যা তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে, সায়মা ওয়াজেদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে নিয়োগের শর্তগুলো পূরণ করেছেন কিনা অথবা কোনো প্রভাবের কারণে তিনি পছন্দের প্রার্থী ছিলেন কিনা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের রুলস অব প্রসিডিউর-এর ৪৯ নম্বর নিয়ম অনুযায়ী, আঞ্চলিক পরিচালক পদে প্রার্থীর জনস্বাস্থ্য বিষয়ে শক্তিশালী একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য বিষয়ে অভিজ্ঞতা এবং নেতৃত্বের ঐতিহাসিক রেকর্ড থাকতে হবে।

ল্যানসেট-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সায়মা ওয়াজেদের রয়েছে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিষয়ে এমএসসি ডিগ্রি। তবে জনস্বাস্থ্য বিষয়ে তার কোনো আনুষ্ঠানিক একাডেমিক ডিগ্রি নেই। ২০২৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন।

সায়মা ওয়াজেদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নেপালের শম্ভু প্রসাদ আচার্য্য। তার জনস্বাস্থ্যে ৩০ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং তিনি এই বিষয়ে ডক্টরেট ডিগ্রিধারী। আচার্য্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন এবং তার অভিজ্ঞতাকে নিয়ে ইতিবাচক মূল্যায়ন করা হয়।

জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক পরিচালক মুকেশ কপিলা ল্যানসেট-কে বলেন, সায়মা ওয়াজেদের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে দুদকের তদন্তের অধিকার রয়েছে। তার মতে, আঞ্চলিক পরিচালকের মতো পদে জনস্বাস্থ্য বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও নেতৃত্বের রেকর্ড থাকা জরুরি।

কাশ্মীরের সাবেক স্বাস্থ্য মহাপরিচালক সালিমুর রেহমান বলেন, অর্থপূর্ণ পরিবর্তনের জন্য একজন আঞ্চলিক পরিচালকের বৈশ্বিক স্বাস্থ্য বিষয়ে উন্নত প্রশিক্ষণ এবং অভিজ্ঞতা থাকা উচিত।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় আঞ্চলিক পরিচালকের পদে অনিয়মের নজির রয়েছে। ২০২৩ সালে ওয়েস্টার্ন প্যাসিফিক অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক তাকেশি কাসাইকে বরখাস্ত করা হয়েছিল অনিয়মের অভিযোগে।

সায়মা ওয়াজেদের নিয়োগের পেছনে আত্মীয়করণের অভিযোগ এবং তার যোগ্যতা নিয়ে বিতর্ক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম ও নীতির যথাযথ প্রয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। দুদকের তদন্তের ফলাফল এবং এই বিতর্কের সমাধান আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য নীতিতে নৈতিকতার গুরুত্ব নির্ধারণে ভূমিকা রাখতে পারে।