পাকিস্তানে এমান-২০২৫-এ অংশ নেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনী

টুইট ডেস্ক: বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ ‘বানৌজা সমুদ্র জয়’ আজ রবিবার (২৬ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউ ও “EXERCISE AMAN-2025” এ অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম নেভাল জেটি ত্যাগ করেছে।

আগামী ৭ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি করাচি, পাকিস্তানে অনুষ্ঠিতব্য এ মহড়ায় অংশ নিতে যাত্রাকালে নৌবাহিনীর ঐতিহ্যবাহী বাদকদল বাদ্যযন্ত্র পরিবেশনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে জাহাজটিকে বিদায় জানানো হয়।

বিদায়ী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চল রিয়ার এডমিরাল মীর এরশাদ আলী। তিনি জাহাজে গমনকারী কর্মকর্তা ও নাবিকদের পেশাদারিত্ব ও দায়িত্বশীলতার ওপর দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন।

জাহাজটির অধিনায়ক ক্যাপ্টেন মোঃ শাহরিয়ার আলম-এর নেতৃত্বে ৩৩ জন কর্মকর্তা, ৫৮ জন প্রশিক্ষণার্থী কর্মকর্তা এবং ২৭৪ জন নৌ সদস্যের এই দলটি পাকিস্তান সফরকালে শ্রীলংকার কলম্বো ও মালদ্বীপের মালে বন্দরে শুভেচ্ছা সফরও করবে।

“EXERCISE AMAN-2025” এর গুরুত্ব

“EXERCISE AMAN-2025” হলো একটি বহুজাতিক সামরিক মহড়া, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নৌবাহিনী, সামরিক বিশেষজ্ঞ ও উচ্চপর্যায়ের পর্যবেক্ষকরা অংশ নেন। এই মহড়ার লক্ষ্য হলো সামুদ্রিক নিরাপত্তা, মানবিক সহায়তা এবং দুর্যোগ মোকাবিলায় আন্তঃদেশীয় সহযোগিতা বৃদ্ধি করা। বাংলাদেশ নৌবাহিনী অতীতেও ২০০৭, ২০০৯ ও ২০১৩ সালে এ মহড়ায় অংশগ্রহণ করে আন্তর্জাতিক মহলে নিজেদের পেশাদারিত্ব প্রমাণ করেছে।

বাংলাদেশের নৌবাহিনীর এ ধরনের উদ্যোগ কেবল দেশের প্রতিরক্ষা কৌশলকে শক্তিশালী করে না, বরং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের কূটনৈতিক অবস্থানও সুদৃঢ় করে। বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সাথে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি এমন মহড়াগুলো সন্ত্রাসবাদ দমন, জলদস্যু মোকাবিলা এবং সমুদ্রপথে অবাধ বাণিজ্যের নিশ্চয়তা বিধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

বিশ্বব্যাপী সমুদ্রপথে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে Multinational Exercise AMAN একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বৈশ্বিক বাণিজ্যের ৮০% সমুদ্রপথে সম্পন্ন হয়। এর মধ্যে ভারত মহাসাগর এবং আশপাশের অঞ্চলগুলো কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশ নৌবাহিনীর এই মহড়ায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক নিরাপত্তা সহযোগিতা এবং চীন, পাকিস্তান, শ্রীলংকা ও মালদ্বীপসহ অন্যান্য দেশের সাথে সামরিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে।

বাংলাদেশের নৌবাহিনীর এই অংশগ্রহণ জাতীয় নিরাপত্তার পাশাপাশি বৈশ্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।