সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে ডব্লিউএইচও পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ
টুইট ডেস্ক: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নিয়োগ নিয়ে এখন আলোচনা তুঙ্গে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার পেছনে নানা অনিয়ম এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে।
দুদকের তদন্তে জানা গেছে, সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে ডব্লিউএইচও’র পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার এবং নিয়মবহির্ভূত কার্যকলাপের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। সায়মার নিয়োগের জন্য উপস্থাপন করা তথ্যও যথাযথ ছিল না।
তাছাড়া, সায়মা পাসপোর্টধারী কানাডার নাগরিক ছিলেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এর পাশাপাশি, তাকে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সফরে সফরসঙ্গী হিসেবে পাঠানো হয়েছে, যা যুক্তিযুক্ত ছিল না বলে দুদক জানায়।
এরই মধ্যে দুদক আরও জানায়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এবং তার পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেশে অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধন করেছেন। গত অক্টোবর-নভেম্বর মাসে ভারতের দিল্লিতে ডব্লিউএইচও’র ৭৬তম সম্মেলনে বাংলাদেশ থেকে শতাধিক কর্মকর্তার বিশাল প্রতিনিধি দল পাঠানো হয়, যার খরচ রাষ্ট্রীয় সম্পদ থেকে এসেছে।
এছাড়া, সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে পূর্বাচল নতুন শহর আবাসিক প্রকল্পে বেআইনিভাবে ১০ কাঠা জমি দখল করারও অভিযোগ উঠেছে, যার প্রেক্ষিতে দুদক একটি দুর্নীতির মামলা দায়ের করেছে।
দুদক সূত্রে আরও জানা গেছে, ‘সূচনা ফাউন্ডেশন’ নামক একটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বিভিন্ন সামাজিক ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে অবৈধভাবে অর্থ আত্মসাত করেছেন। তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ওপর অবৈধ প্রভাব বিস্তার করে ফাউন্ডেশনের নামে করমুক্ত অর্থ আদায় করেছেন।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগে বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। শেখ হাসিনার পরিবারকে নিয়ে চলমান আলোচনার মধ্যেই এমন দুর্নীতি সংক্রান্ত খবর তার দলের জন্য কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করছে। বিশেষ করে দেশের জনগণের মধ্যে যখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ রয়েছে, তখন সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ তাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে পরিবারিক প্রভাব খুবই দৃশ্যমান, তবে এর মধ্যে আইনগত এবং নৈতিক বিতর্কের জন্ম নেয়। সায়মার বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ উঠলে, এটি রাজনৈতিক বিরোধীদের জন্য এটি একটি সুযোগ ।
সব মিলিয়ে, সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে, যার প্রভাব জনগণ, এবং রাজনীতিক দলগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবর্তন আনতে পারে। এটি ভবিষ্যতে দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক প্রেক্ষাপটে গভীর প্রভাব ফেলবে, বিশেষ করে যদি তদন্তে বড় ধরনের দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়।