ভারতে বিরল রোগ জিবিএস, আক্রান্ত ৭৩

বিশ্ব ডেস্ক: ভারতে বিরল অটোইমিউন রোগ গিইয়ান বারি সিনড্রোম (জিবিএস) এর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। দেশটির মহারাষ্ট্রের পুনে অঞ্চলে অন্তত ৭৩ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘এই সময়’ জানিয়েছে।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্তদের মধ্যে ৪৭ জন পুরুষ এবং ২৬ জন নারী রয়েছেন। এদের মধ্যে ১৪ জনকে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখা হয়েছে। পুনের স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে ৪৪ জন পুনের গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দা।

এছাড়া ১১ জন সিটি করপোরেশন এবং ১৫ জন পিম্পরি চিঞ্চওয়ার পৌরসভার অধিবাসী। আশপাশের এলাকাতেও এ রোগে আক্রান্ত রোগীর খোঁজ মিলেছে।

পুনের স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, গত সপ্তাহে ২৪ জন আক্রান্ত হওয়ার পর পরিস্থিতি মোকাবিলায় র‌্যাপিড রেসপন্স টিম (আরআরটি) গঠন করা হয়েছে। তারা রোগীদের শনাক্ত ও চিহ্নিত করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করছে।

গিইয়ান বারি সিনড্রোমের কারণ ও উপসর্গ

জিবিএস একটি বিরল অটোইমিউন রোগ। এতে দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে। এর ফলে শরীরে নিউরোলজিক্যাল জটিলতা দেখা দেয়।

প্রাথমিক লক্ষণ: হাত-পা অসাড় হয়ে যাওয়া।

অন্যান্য উপসর্গ:

শরীরে ব্যথা ও দুর্বলতা

পেশির সংবেদনশীলতা হারানো

শ্বাসকষ্ট ও খাবার খেতে অসুবিধা

পক্ষাঘাত

বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্যাম্পাইলোব্যাক্টের জেজুনি নামক একটি ব্যাক্টেরিয়া থেকে এ রোগের সংক্রমণ হতে পারে। এছাড়া ভাইরাস সংক্রমণের ফলেও এ রোগ দেখা দিতে পারে।

নিরাময়ের সম্ভাবনা

গবেষকরা বলছেন, সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু হলে জিবিএস থেকে সেরে ওঠা সম্ভব। তবে প্রাথমিক অবস্থায় রোগ নির্ণয় ও দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

গিইয়ান বারি সিনড্রোম (জিবিএস): উৎপত্তি ও বৈজ্ঞানিক তথ্য

গিইয়ান বারি সিনড্রোম (GBS) এক ধরনের অটোইমিউন রোগ, যেখানে দেহের ইমিউন সিস্টেম স্নায়ুতন্ত্র আক্রমণ করে।

উৎপত্তি

ক্যাম্পাইলোব্যাক্টের জেজুনি ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস (যেমন জিকা, সিটোমেগালোভাইরাস) সংক্রমণ রোগের প্রধান কারণ।

টিকা, অস্ত্রোপচার, বা আঘাতের পর এ রোগের ঝুঁকি বাড়ে।

প্রক্রিয়া

মাইলিন শিথ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় স্নায়ুর সংকেত পরিবহন ব্যাহত হয়।

ফলে অসাড়তা, পেশি দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট ও পক্ষাঘাত দেখা দেয়।

চিকিৎসা

ইমিউনোগ্লোবুলিন থেরাপি (IVIG) এবং প্লাজমা এক্সচেঞ্জ (PE) কার্যকর।

সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু হলে সম্পূর্ণ সেরে ওঠা সম্ভব।