সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সাক্ষাৎকার

৫ ও ৬ আগস্ট ঢাকায় ছিলাম এবং ৭ আগস্ট বাড়ি থেকে বের হয়েছি।

টু‌ইট ডেস্ক: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একজন পুলিশ সদস্য সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে বলেন, “গুলি করি, মরে একটা। একটাই যায় স্যার, বাকিডি যায় না।” এই ঘটনার মাধ্যমে ছাত্র-জনতার ওপর হামলায় মন্ত্রীর সরাসরি সম্পৃক্ততা প্রকাশ পায়।

ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং আন্দোলন রূপ নেয় অভ্যুত্থানে। এর জেরে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম সারির নেতারা, শেখ হাসিনাসহ, দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। পলাতক নেতাদের তালিকায় ছিলেন আসাদুজ্জামান খানও।

সম্প্রতি, পালিয়ে থাকার পর ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি তার দেশত্যাগের বিষয়ে মুখ খোলেন।

সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি ১০ বছর ৬ মাস বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলাম। ৫ ও ৬ আগস্ট ঢাকায় ছিলাম এবং ৭ আগস্ট বাড়ি থেকে বের হয়েছি।”

আন্দোলন দমন নিয়ে অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি দাবি করেন, এটি একটি সামরিক অভ্যুত্থান ছিল এবং গোয়েন্দা বিভাগগুলোর ব্যর্থতার কারণে এমনটি ঘটেছে। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তার ভূমিকা নিয়ে তিনি সরাসরি কোনো দায় স্বীকার করেননি।

ছাত্র-জনতা হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় অন্যতম আসামি আসাদুজ্জামান খান। তার নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গুলি চালিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি, তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং অর্থ পাচারের অভিযোগও রয়েছে।

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ২০২৪ সালে তার এবং তার পরিবারের সব ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেয়। এ আদেশ অনুযায়ী, তার স্ত্রী লুৎফুল তাহমিনা খান, ছেলে সাফি মুদ্দাসির খান এবং মেয়ে সাফিয়া তাসনিম খানের নামে থাকা সব ধরনের অ্যাকাউন্ট বন্ধ রাখতে বলা হয়।

বিএফআইইউ তাদের আদেশে উল্লেখ করে, অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইন, ২০১২ অনুযায়ী এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, আওয়ামী লীগের নেতাদের এক-তৃতীয়াংশ কারাগারে, এক-তৃতীয়াংশ দেশের বাইরে, এবং এক-তৃতীয়াংশ লুকিয়ে রয়েছেন। বিদেশে অবস্থানরত নেতারা বাংলাদেশে ফিরে রাজনীতি করতে চান বলে জানিয়েছেন।

ছাত্র-জনতার ওপর গুলির নির্দেশ দেওয়ায় আসাদুজ্জামান খানের ভূমিকা এবং তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে দেশে-বিদেশে তুমুল আলোচনা চলছে। তার বিরুদ্ধে মামলা এবং সম্পদ জব্দের ঘটনায় ভবিষ্যতে কী হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা নানা মতামত দিচ্ছেন।