কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি চুক্তি

বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি কৌশলগত অংশীদারত্বে নতুন মাত্রা

টুইট ডেস্ক: বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান শিল্প খাত ও জ্বালানি চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে কাতার এনার্জি এবং যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এক্সিলারেট এনার্জির সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ। এ চুক্তির আওতায় প্রতি বছর ১০ লাখ টন বা ১ মিলিয়ন টন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ করা হবে।

২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে এই এলএনজি সরবরাহ শুরু হবে এবং এই চুক্তি কার্যকর থাকবে আগামী ১৫ বছর।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্সকে জানান, এই চুক্তি বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান শিল্প খাতের জন্য নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করবে। একই সঙ্গে এটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্বকে আরও শক্তিশালী করবে।

বাংলাদেশ বর্তমানে শিল্পখাতের সম্প্রসারণের জন্য নির্ভরযোগ্য এবং টেকসই জ্বালানি সরবরাহের ওপর জোর দিচ্ছে। এলএনজির ব্যবহার বৃদ্ধির মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব ও কার্যকর জ্বালানি ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে।

২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়। এলএনজির মূল্যে ব্যাপক ঊর্ধ্বগতি ঘটে, যা বাংলাদেশকে সস্তা কয়লার দিকে ঝুঁকতে বাধ্য করে। তবে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ এখন জ্বালানি সংকট সমাধানের দিকে এগোচ্ছে।

কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই চুক্তি শুধু জ্বালানি নিরাপত্তা নয়, বরং আন্তর্জাতিক মিত্রদের সঙ্গে বাংলাদেশের কৌশলগত সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করেছে। এই উদ্যোগ বাংলাদেশকে জ্বালানি খাতে আরও সক্ষম করে তুলবে এবং শিল্পখাতের সম্প্রসারণে বড় ভূমিকা রাখবে।

রাজনৈতিকভাবে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশ কাতারের সঙ্গে চুক্তি বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যাবে। এটি সরকারের বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির কৌশলের একটি বড় উদাহরণ হিসেবে দেখা যেতে পারে।

যদিও এলএনজি সরবরাহ চুক্তি বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তার একটি বড় পদক্ষেপ, তবে এর কার্যকারিতা নির্ভর করবে যথাযথ বাস্তবায়ন ও মূল্য স্থিতিশীলতার ওপর। আন্তর্জাতিক বাজারের প্রতিকূল পরিস্থিতি, যেমন যুদ্ধ বা সংকট, এই চুক্তির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

তবে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি ও কৌশলগত অংশীদারত্ব বাংলাদেশকে নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত উন্মোচনে সহায়তা করবে।