তরুণ প্রজন্মের জন্য নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস
টুইট ডেস্ক: প্রযুক্তির প্রসার এবং বিশ্বায়নের প্রভাবে বর্তমান প্রজন্ম শুধুমাত্র বাংলাদেশি বা তরুণ নয়, বরং বৈশ্বিক প্রজন্মের অংশে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, “এই প্রজন্ম পুরোনো বাংলাদেশে ফিরে যেতে চায় না। তাই তাদের জন্য একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।”
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) প্রতিষ্ঠাতা ক্লাউস শোয়াবের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব কথা বলেন ড. ইউনূস।
তরুণ প্রজন্মের সম্ভাবনা ও সংস্কারের প্রস্তাবনা
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বর্তমান প্রজন্মকে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রজন্ম হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “তাদের রয়েছে অমিত সম্ভাবনা। তবে এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হলে তরুণদের ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।”
তিনি জানান, তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে একটি ঐকমত্য কমিশন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই কমিশন সকল রাজনৈতিক দল এবং সুশীল সমাজের ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি ‘জুলাই সনদ’ প্রস্তুত করবে।
ড. ইউনূস উল্লেখ করেন, “গত বছরের জুলাই মাসে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে বৈষম্য নিরসনের দাবিতে রাস্তায় নেমেছিল। সেই সময় তারা ঢাকার দেয়ালে গ্রাফিতি এঁকে তাদের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছিল। সেই আন্দোলন তরুণদের নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নকে প্রকাশ করে।”
প্রধান উপদেষ্টা দেশের রাজনৈতিক সংস্কার প্রসঙ্গে বলেন, “বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছরে নতুন ভোটারদের ভোট দেওয়ার সুযোগ হয়নি, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।” তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশের মানুষ কি ধরনের নির্বাচন চায় তা আগে জানতে হবে।
তিনি আরও বলেন, “সরকার নির্বাচন আয়োজনের অপেক্ষায় রয়েছে। যদি জনগণ দ্রুত সংস্কার চায়, তাহলে এ বছরের শেষ নাগাদ নির্বাচন আয়োজন করা হবে। আর যদি দীর্ঘমেয়াদী সংস্কার প্রয়োজন হয়, তাহলে আরও ছয় মাস সময় লাগবে।”
দেশের অর্থনীতি প্রসঙ্গে ড. ইউনূস জানান, “আমাদের সরকার ইতোমধ্যে দেশের অর্থনীতিকে ইতিবাচক ধারায় ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এবং ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ইতিবাচক গতি এসেছে।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের নাগরিকরা যেন কোনো বাধা বা হুমকি ছাড়াই অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারেন, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। একমাত্র জনগণের মতামতকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে।”
প্রধান উপদেষ্টার এই বক্তব্য তরুণ প্রজন্মের প্রতি সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি এবং দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রতি সরকারের অঙ্গীকার প্রকাশ
ডাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বৈঠক।