গাজীপুরে বিক্ষোভে উত্তেজনা: অর্ধশতাধিক যানবাহন ভাঙচুর, ট্রাক-বাস ও কারখানায় অগ্নিসংযোগ
টুইট ডেস্ক: গাজীপুরের বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের বন্ধ হওয়া ১৬টি কারখানা পুনরায় চালুর দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ ব্যাপক সহিংসতায় রূপ নিয়েছে।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে চন্দ্রা-নবীনগর সড়কে অবস্থান নিয়ে শ্রমিকরা অর্ধশতাধিক যানবাহন ভাঙচুর করেন এবং একটি মালভর্তি ট্রাক ও তিনটি বাসে অগ্নিসংযোগ করেন।
বেক্সিমকোর ১৬টি কারখানা গত বছরের (২০২৪) ১৫ ডিসেম্বর থেকে বন্ধ রয়েছে। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্রয়াদেশের অভাব ও ঋণখেলাপির কারণে এসব কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এর ফলে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ৪২ হাজার শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।
শ্রমিকরা গতকাল গণসমাবেশ করে তাদের দাবি জানানোর পর, বুধবার বিকেলে পুনরায় সান সিটি মাঠে সমাবেশ করেন। একপর্যায়ে শ্রমিকদের একটি অংশ চন্দ্রা-নবীনগর সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ তৈরি করেন এবং বিক্ষোভ শুরু করেন।
শ্রমিকদের বিক্ষোভের কারণে সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। উত্তেজিত শ্রমিকরা সড়কে চলাচলরত অর্ধশতাধিক যানবাহন ভাঙচুর করেন এবং একপর্যায়ে একটি ট্রাক ও তিনটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেন।
এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। পরে রাত পৌনে আটটার দিকে সড়কের যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
শ্রমিকদের একটি অংশ তেঁতুইবাড়ি এলাকার ‘গ্রামীণ ফেব্রিকস’ কারখানায় আগুন ধরিয়ে দেয়। ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়।
বিক্ষোভের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে দীপ্ত টিভি, প্রতিদিনের বাংলাদেশ ও বাংলা ভিশনের তিন সংবাদকর্মী শ্রমিকদের হামলার শিকার হন। তাদের একটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করা হয়।
কাশিমপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, শ্রমিকদের একটি অংশ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে যানবাহন ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্রিয় ছিল।
ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ডিইপিজেড) ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা প্রণব চৌধুরী জানান, পাঁচতলা ভবনের নিচতলায় আগুন ধরানো হয়। ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
বেক্সিমকোর বন্ধ কারখানাগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ ক্রমশ বাড়ছে। তাদের জীবন-জীবিকার স্বার্থে দ্রুত সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
(ছবি ও তথ্যসূত্র: প্রথম আলো)