ট্রাম্পের নাগরিকত্ব নীতির বিরুদ্ধে ২২ স্টেটের ঐক্যবদ্ধ আইনি লড়াই

জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব নীতি বাতিলের বিরুদ্ধে ২২টি স্টেটের মামলা

বিশ্ব ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়ার নীতি বাতিলের নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে মামলা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ২২টি স্টেট ও ডিসট্রিক্ট অব কলম্বিয়া। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি ২০২৫) স্টেটগুলোর অ্যাটর্নি জেনারেলরা সম্মিলিতভাবে আলাদা দুটি ফেডারেল মামলা দায়ের করেন।

সোমবার (২০ জানুয়ারি ২০২৫) দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর একাধিক নির্বাহী আদেশে সই করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্যে অন্যতম একটি আদেশে তিনি ঘোষণা দেন, অ্যামেরিকায় জন্ম নেওয়া শিশুর বাবা-মা’র কেউ দেশের নাগরিক বা স্থায়ী বাসিন্দা না হলে, সেই শিশুটি আর জন্মসূত্রে অ্যামেরিকার নাগরিকত্ব পাবে না। ট্রাম্প এই আদেশ কার্যকর করতে আগামী মাস থেকে নির্দেশ দিয়েছেন।

ট্রাম্পের আদেশ জারির পরপরই ডেমোক্র্যাট-নিয়ন্ত্রিত স্টেটগুলো ও বেশ কয়েকটি নাগরিক অধিকার সংস্থা এর তীব্র বিরোধিতা করে। তাদের দাবি, সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনী জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করেছে। ট্রাম্পের আদেশ এই সাংবিধানিক নীতি লঙ্ঘন করছে।

ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল রব বন্টে বলেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে দেশের মূল ভিত্তিগুলোতেই আঘাত হানার পথ বেছে নিয়েছেন।”

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) ম্যাসাচুসেটসের ফেডারেল আদালতে দায়ের করা মামলায় নেতৃত্ব দেয় নিউ জার্সি। নিউ জার্সির অ্যাটর্নি জেনারেল ম্যাট প্ল্যাটকিন বলেন, “ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশটি দেশে জন্ম নেওয়া অনেক শিশুর জীবনকে হুমকির মুখে ফেলবে।”

অ্যারিজোনার অ্যাটর্নি জেনারেল ক্রিস মেইজ মন্তব্য করেন, “এই আদেশ শুধু সংবিধানই নয়, ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্টও লঙ্ঘন করছে। অথচ প্রেসিডেন্ট সংবিধান রক্ষার শপথ নিয়েছেন।”

নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন অ্যামেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (ACLU), একটি অভিবাসী সংগঠন, এবং এক সন্তানসম্ভবা নারীও ট্রাম্পের আদেশের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তারা এই আদেশকে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং সাংবিধানিক সুরক্ষা পরিপন্থী বলে অভিহিত করেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের এই নির্বাহী আদেশ বাস্তবায়ন হলে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী সম্প্রদায়ের ওপর এর ব্যাপক প্রভাব পড়বে। মামলাটি মার্কিন বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির সাংবিধানিক ভিত্তি চ্যালেঞ্জ করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সূত্র: বিবিসি