সীমান্তে গোপন চুক্তি বাতিলে ভারতের উদ্দেশ্যে চিঠি পাঠাবে বাংলাদেশ

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত চুক্তি বাতিলের উদ্যোগ, ভারতের উদ্দেশ্যে চিঠি পাঠাবে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে অসম চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সীমান্ত ইস্যুতে গোপন চুক্তি প্রসঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।

২০১০ সালের চুক্তি ও কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ

উপদেষ্টা জানান, ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতীয় প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়ে সীমান্তে শূন্য রেখার ভেতরে অবৈধভাবে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের অনুমতি দেন। এরপর ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চারটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।

সীমান্তে চার হাজার ১৫৬ কিলোমিটারের মধ্যে তিন হাজার ২৭১ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভারত বেআইনিভাবে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ সম্পন্ন করেছে। বাকি ৮৮৫ কিলোমিটার এলাকাতেও দ্রুত কাজ এগিয়ে নিচ্ছে তারা।

গোপন চুক্তি ও সীমান্তের নিয়ম লঙ্ঘন

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, শেখ হাসিনা সরকার ভারতের সঙ্গে সীমান্ত ইস্যুতে অন্যায্য চারটি চুক্তি সম্পাদন করেছিল। ভারত এই চুক্তিগুলোকে ভিত্তি করে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সীমান্তে অবৈধ কার্যক্রম চালিয়েছে।

১৯৭৫ সালের বাংলাদেশ-ভারত যুগ্ম-সীমান্ত নির্দেশাবলি অনুযায়ী, শূন্য রেখার ১৫০ গজের মধ্যে কোনো প্রতিরক্ষামূলক কার্যক্রম নিষিদ্ধ। তবে ভারত এ নিয়ম লঙ্ঘন করে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করেছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও জানান, বিজিবির সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেলসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ করা হবে। সীমান্তে প্রতিটি এলাকার কড়া নজরদারির পাশাপাশি ভারতের অগ্রহণযোগ্য কার্যক্রম বন্ধে সক্রিয় ভূমিকা রাখার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

সীমান্ত পরিস্থিতি আপাতত শান্তিপূর্ণ থাকলেও ভবিষ্যতে এমন চুক্তি ও কার্যক্রম রোধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

বাংলাদেশ সরকার সীমান্তে গোপন চুক্তির ফলশ্রুতিতে তৈরি হওয়া জটিলতা সমাধানে সচেষ্ট। দেশটির সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কঠোর অবস্থান নেওয়ার পাশাপাশি ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাবে বাংলাদেশ।