ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথবাক্য

মার্কিন প্রেসিডেন্টদের শপথবাক্য ও প্রথা

নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ (২০ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও শপথ গ্রহণ করবেন। ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনে প্রধান বিচারপতির কাছে তিনি শপথ গ্রহণ করবেন, যা তার দ্বিতীয় মেয়াদের সূচনা করবে। এই শপথের মধ্য দিয়ে তিনি আবারও প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের শপথ বাক্য হলো:

“আমি সর্বান্তঃকরণে শপথ করছি (অথবা নিশ্চিত করছি) যে, আমি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিশ্বস্ততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করব এবং আমার সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে দেশের সংবিধান সংরক্ষণ করব, একে সুরক্ষা দেব এবং এর প্রতিপালন করব।”

প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটনের শপথে কিছুটা ভিন্নতা ছিল, যেখানে তিনি প্রশ্নবোধক বাক্য উচ্চারণ করেছিলেন এবং তাকে “হ্যাঁ” বলে উত্তর দিতে হতো। পরবর্তীতে এ রীতি পরিবর্তিত হয়ে আজকের শপথ বাক্য ব্যবহৃত হচ্ছে।

বাইবেল বা অন্য বইয়ে হাত রাখা:

মার্কিন প্রেসিডেন্টরা ঐতিহ্যগতভাবে শপথ গ্রহণের সময় বাইবেলের ওপর হাত রেখে শপথ নেন। প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটনের সময় থেকেই এই প্রথা শুরু হয়। তবে কিছু প্রেসিডেন্ট যেমন টমাস জেফারসন, ক্যালভিন কুলিজ, এবং থিওডর রুজভেল্ট বাইবেলের পরিবর্তে অন্যান্য বইয়ে হাত রেখেছিলেন।

২০১৭ সালে, ডোনাল্ড ট্রাম্প দুটি বাইবেলের ওপর হাত রেখে শপথ নিয়েছিলেন। এদিকে, বাইডেন তার শপথে ১৮৯৩ সালে তার পরিবার থেকে উত্তরাধিকারী হওয়া একটি চামড়ায় মোড়ানো বাইবেলে হাত রেখেছিলেন।

প্রথা অনুযায়ী শপথ গ্রহণ:

শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠান ক্যাপিটল ভবনের পশ্চিম প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়, তবে এবার শীতকালীন কারণে অনুষ্ঠানটি ক্যাপিটল রাউটেন্ডা হলে অনুষ্ঠিত হবে। শপথ অনুষ্ঠানের আগে ভাইস প্রেসিডেন্ট শপথ নেন, তার পর প্রেসিডেন্ট শপথ গ্রহণ করেন।

ভাইস প্রেসিডেন্টের শপথ বাক্য:

ভাইস প্রেসিডেন্টের শপথ বাক্য প্রেসিডেন্টের শপথ বাক্যের তুলনায় কিছুটা ভিন্ন। ১৮৮৪ সাল থেকে, ভাইস প্রেসিডেন্ট, সেনেটর, প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা শপথ গ্রহণের সময় এই বাক্যটি পড়েন। ভাইস

প্রেসিডেন্টের শপথ বাক্য হলো:

“আমি সর্বান্তকরণে শপথ করছি (অথবা নিশ্চিত করছি) যে, আমি সংবিধান মেনে চলব, দেশি-বিদেশি যেকোনো শত্রুর হাত থেকে সংবিধানকে রক্ষা করব। আমি সংবিধানের প্রতি সত্যিকারের বিশ্বাস ও আনুগত্য পোষণ করব। কারও প্রতি অনুরাগ-বিরাগের বশবর্তী না হয়ে আমি স্বাধীনভাবে এই দায়িত্ব গ্রহণ করছি। যে দায়িত্ব পালনে এবং যে পদে কাজ করতে আমি এগিয়ে যাচ্ছি, তা সুচারুভাবে এবং বিশ্বস্ততার সঙ্গে পালন করব। ঈশ্বর আমাকে সহায় হন।”

শপথের পরবর্তী কার্যক্রম:

শপথ গ্রহণের পর, প্রেসিডেন্ট একটি অভিষেক ভাষণ দেন, যেখানে তিনি তার দায়িত্ব পালনের সংকল্প ও পরিকল্পনা জানান। পরবর্তী সময়ে বিদায়ী প্রেসিডেন্টকে বিদায় জানানো হয় এবং শপথ বইয়ে স্বাক্ষর করা হয়। তারপর, আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে একটি মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়।

২০ জানুয়ারি: অভিষেক দিবস:

মার্কিন প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিন হলো ২০ জানুয়ারি, যেটি “অভিষেক দিবস” নামে পরিচিত। এ অনুষ্ঠানটি চার বছর পর পর অনুষ্ঠিত হয়, তবে যদি ২০ জানুয়ারি রবিবার পড়তে থাকে, তবে শপথ অনুষ্ঠান একদিন পিছিয়ে ২১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়।

প্রথাগত প্রক্রিয়া:

এই শপথ গ্রহণের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন প্রেসিডেন্ট তার দায়িত্ব শুরু করেন, যা একটি ঐতিহাসিক এবং সাংবিধানিক প্রক্রিয়া হিসেবে প্রতিফলিত হয়।