সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুরের বাসায় দুদকের অভিযান: নগদ ১৭ লাখ টাকা উদ্ধার
টুইট ডেস্ক: দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার (এসকে) সুর চৌধুরীর বাসায় অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রোববার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর ধানমন্ডিতে তার বাসায় অভিযান চালিয়ে এ পর্যন্ত নগদ ১৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
দুদক পরিচালক মো. সাইমুজ্জামানের নেতৃত্বে পরিচালিত এ অভিযানের বিষয়ে সংস্থাটির একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
গত ১৪ জানুয়ারি জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুদক সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে। এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন তার স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী এবং মেয়ে নন্দিতা সুর চৌধুরী।
দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম জানান, ২০২৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর প্রাথমিক অনুসন্ধান প্রতিবেদন অনুযায়ী মামলাটি দায়ের করা হয়।
সাবেক ডেপুটি গভর্নর থাকা অবস্থায় এসকে সুরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আর্থিক কেলেঙ্কারিতে সহযোগিতা ও সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। বিশেষ করে, আলোচিত এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারের ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
পি কে হালদারের আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় দেওয়া কয়েকজন আসামির জবানবন্দিতে এসকে সুরের নাম উঠে আসে।
অভিযোগ রয়েছে, ডেপুটি গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি এই কেলেঙ্কারিতে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেছেন।
২০২২ সালে আলোচিত এই ঘটনার সূত্র ধরে দুদক এসকে সুরসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে। ওই বছরের আগস্টে তার এবং তার পরিবারের সব ধরনের ব্যাংক লেনদেনের তথ্য চেয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে চিঠি দেয় দুদক।
২০২২ সালের ২৯ মার্চ তাকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড (আইএলএফএসএল) থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ লুটপাটের ঘটনায় তার জিজ্ঞাসাবাদ উল্লেখযোগ্য ছিল।
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ডেপুটি গভর্নরের পদ থেকে অবসরে যান এসকে সুর চৌধুরী। অবসরের পর তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
দুদক অভিযান অব্যাহত রেখেছে এবং তদন্তে উঠে আসা সব তথ্য বিচার বিশ্লেষণ করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সংস্থাটি।
দুদকের এই অভিযান আর্থিক কেলেঙ্কারি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানের ইঙ্গিত বহন করে, যা দেশের অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।