টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগ: প্রধানমন্ত্রী স্টারমার প্রশ্নের মুখে

বিশ্ব ডেস্ক: যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারকে পার্লামেন্টে কঠোর প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে। বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান কেমি বেইডনক বুধবার (১৫ জানুয়ারি) পার্লামেন্টে এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন।

দুর্নীতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) টিউলিপ সিদ্দিক অর্থ মন্ত্রণালয়ের ইকোনমিক সেক্রেটারি (সিটি মিনিস্টার) পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তিনি আর্থিক খাতে দুর্নীতি দমনের দায়িত্বে ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী স্টারমার তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে টিউলিপকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, ‘গভীর দুঃখের সঙ্গে আমি আপনার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করছি।’

বিরোধীদলীয় নেতা কেমি বেইডনক পার্লামেন্টে বলেন, ‘বাজারে যখন অস্থিরতা চলছে, তখন সাবেক সিটি মিনিস্টারকে ঘিরে উদ্ভূত সংকটে জড়িয়ে এ বিষয়ে মনোযোগ হারিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধুর পদত্যাগে প্রধানমন্ত্রী গভীর দুঃখ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এটি তাঁর সিদ্ধান্তের বিষয়ে আমাদের কী বার্তা দেয়? আর ঘটনাটি ছিল দুর্নীতি দমনের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির ফৌজদারি তদন্ত হচ্ছে।’

বিরোধীদলীয় নেতা আরও উল্লেখ করেন, ‘নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সাবেক সিটি মিনিস্টারকে উপহার দেওয়া লন্ডনের সম্পত্তি (ফ্ল্যাট) লুটপাটের অর্থে কেনা হতে পারে।’ তিনি প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন, ‘কোনো সম্পত্তি চুরি করা অর্থ দিয়ে কেনা হয়েছে কি না, তার যথাযথ তদন্ত নিশ্চিত করতে, প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে পুরোপুরি সহায়তার প্রস্তাব দেবেন কি না?’

প্রধানমন্ত্রী স্টারমার জবাবে বলেন, ‘সাবেক সিটি মিনিস্টার নিজের বিষয়টি স্বাধীন উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরেছেন। ওই উপদেষ্টা এবং তিনি নিজেও জানেন, এখানে কোনো বিধি লঙ্ঘন করা হয়নি। তিনি জানেন, এখানে কোনো অনিয়ম পাননি উপদেষ্টা। এ বিষয়ে পুরোপুরি সহযোগিতা করছেন সাবেক সিটি মিনিস্টার।’

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে উঠে এসেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠদের কাছ থেকে লন্ডনের কিংস ক্রস এলাকায় বিনা মূল্যে একটি ফ্ল্যাট উপহার নেন টিউলিপ। লন্ডনের হ্যাম্পস্টিড এলাকায় একটি অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে কেনা ফ্ল্যাটে কয়েক বছর বসবাস করেন তিনি। ওই সময় নিজের স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে ওই ফ্ল্যাটের কথা উল্লেখ করেছিলেন টিউলিপ।

টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর মন্ত্রিসভার সদস্যদের বিধিবিষয়ক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা লাউরি ম্যাগনাস তদন্ত করেন। গতকালই প্রধানমন্ত্রীর কাছে লেখা এক চিঠিতে তিনি বলেন, তদন্তে টিউলিপের বিরুদ্ধে কোনো অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

তবে দুঃখজনক বিষয় হলো, বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে সুনাম ক্ষুণ্ন হওয়ার সম্ভাব্য ঝুঁকির ব্যাপারে তিনি যথেষ্ট সচেতন ছিলেন না।