লুৎফুজ্জামান বাবর খালাস পেলেন: এক দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান
বিশেষ প্রতিবেদন: সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর অবশেষে সব মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন।
দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ার পর এদিন তিনি স্বজনদের কাছে ফিরে যাওয়ার স্বপ্ন দেখলেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসিফ ইমরান জিসান। আসামিপক্ষে আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান এবং শিশির মনির।
আইনজীবী শিশির মনির আদালতের রায়ের পর বলেন, “লুৎফুজ্জামান বাবরকে একসময় ৭৮ দিন রিমান্ডে রাখা হয়েছিল। সেই সময়ে রাষ্ট্রপক্ষ বারবার তাকে চাপ দিয়েছিল, যেন তিনি খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে জড়িত করে জবানবন্দি দেন। কিন্তু তিনি দৃঢ়চিত্তে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। এটি ছিল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের মূল কারণ।”
তিনি আরও জানান, আদালত তার খালাসের আদেশ দ্রুত কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এই রায়ের ফলে বাবরের কারামুক্তি শুধু একটি আইনি বিষয় নয়, এটি তার দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান।
কঠিন সময়ের গল্প
লুৎফুজ্জামান বাবর একসময় দুর্নীতি, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, এবং ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার মতো গুরুত্বপূর্ণ মামলায় দণ্ডিত হয়েছিলেন। তবে একের পর এক আপিল শুনানিতে তিনি খালাস পান। গত ১৮ ডিসেম্বর ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পান বাবর। তার বিরুদ্ধে করা সব মামলায় দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর এখন তিনি মুক্ত হতে যাচ্ছেন।
একজন রাজনীতিবিদের যাত্রা
১৯৫৮ সালের ১০ অক্টোবর নেত্রকোণায় জন্মগ্রহণ করা লুৎফুজ্জামান বাবর ১৯৯১ সালে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে তিনি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।
মানবিক এক অধ্যায়ের সমাপ্তি
দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার এই অবসান কেবল বাবরের জন্য নয়, তার পরিবার এবং অনুসারীদের জন্যও এক স্বস্তি। আইনজীবী শিশির মনির বলেন, “তার পরিবারের স্বজন, গুণগ্রাহী এবং অনুসারীরা আইনি প্রক্রিয়া মেনে তাকে যথাযথ সম্মান ও মর্যাদায় বাসায় ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন। এটি কেবল একটি রায় নয়, এটি মানবিকতার জয়।”
TweetNews24.com – সঠিক সংবাদ, সবার আগে।