ঢাকার বায়ুদূষণ চরমে: সমাধানের উদ্যোগ নি‌তে হ‌বে

ব‌দিউল আলম লিংকন: বিশ্বের অন্যতম দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকা আবারও শীর্ষে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বায়ুর গড় মান ছিল ২৮৮, যা গত ৯ বছরে সর্বোচ্চ। এর আগে, ২০২৩ সালে এই মান ছিল ১৯৫।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বায়ুদূষণের দিক থেকে ঢাকা দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে।

পরিবেশ অধিদপ্তর ও গবেষণাগারের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার বায়ুর মান দিন দিন খারাপ হচ্ছে। তবে শুধু কাজ নয়, পরিবহন, ব্যবসায়ী, শিল্পের কার্যক্রম এবং সাধারণ মানুষের অভ্যাসগত বিষয়ও এ দূষণের সঙ্গে জড়িত।

দূষণের কারণ ও প্রভাব:
ঢাকার বায়ুদূষণের বড় কারণগুলো হলো পুরনো যানবাহনের কালো ধোঁয়া, নির্মাণকাজের ধুলা, আশপাশের ইটভাটার দূষণ এবং আশপাশের জেলার বাতাসে মিশে আসা দূষিত কণা।

পরিবেশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যাপসের এক জরিপে দেখা গেছে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বায়ুর গড় মান ছিল ২৮৮, যা গত ৯ বছরে সর্বোচ্চ। এর আগে, ২০২৩ সালে এই মান ছিল ১৯৫।

গত বছরের তুলনায় বায়ুদূষণ প্রায় ২৬ ভাগ বেড়েছে। ২০১৬ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে ডিসেম্বরে বায়ুমানের অবনতি হয়েছে প্রায় ৩১ ভাগ।

গত ডিসেম্বরের একটি দিনও রাজধানীর মানুষ নির্মল বায়ু উপভোগ করতে পারেনি।

পরিবেশ অধিদপ্তর দূষণ নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে:

১. পুরনো গাড়ি তুলে দেওয়ার নির্দেশনা: পরিবহনের কালো ধোঁয়া কমাতে পুরনো যানবাহন তুলে দেওয়ার জন্য ছয় মাসের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

২. ভ্রাম্যমাণ আদালত: সারা দেশে ১২টি ভ্রাম্যমাণ আদালত দূষণ নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। এর মধ্যে ঢাকা ও আশপাশের জেলার জন্য সার্বক্ষণিক কাজ করছে ৮টি আদালত।

৩. ইটভাটার নিয়ন্ত্রণ: নতুন কোনো ইটভাটার অনুমোদন বা পরিবেশ ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে না।

জনগণের সহযোগিতা প্রয়োজন:

দূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের পদক্ষেপ কার্যকর করতে নাগরিকদেরও ভূমিকা অপরিহার্য। অপ্রয়োজনীয়ভাবে গাড়ি ব্যবহার এবং পরিবেশবান্ধব অভ্যাস গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে নাগরিকরা এই সংকট মোকাবিলায় ভূমিকা রাখতে পারেন।

পরিবেশ অধিদপ্তর আশাবাদী যে, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বায়ুদূষণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে। তবে দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ না নিলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।