লস অ্যাঞ্জেলসে দাবানলে মৃতের সংখ্যা ২৪
টুইট ডেস্ক : এক সপ্তাহ ধরে দাবানলে পুড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলস। ভয়াবহ দুর্যোগে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ জনে। ক্যালিফোর্নিয়ায় আবহাওয়ার পূর্বাভাসে প্রচণ্ড বাতাস বয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে, যা চলতি সপ্তাহেই দাবানলকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
তিনটি জায়গায় ছড়িয়ে পড়া দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে দমকল কর্মীরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কর্মকর্তারা বলছেন, রোববার থেকে শুষ্ক বাতাস আবার বেড়ে বুধবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে এবং এ সময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৯৬ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।
বাতাস বেড়ে যাওয়ার আগেই পালিসেইডস ও ইটনের দাবানল ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতে কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। স্থানীয় দমকলকর্মীদের সাথে একযোগে কাজ করছে আরও আটটি রাজ্য এবং কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আসা কর্মীরা।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রোববার পর্যন্ত দাবানলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪ জনে। এর আগে কর্মকর্তারা ১৬ জন নিখোঁজ থাকার কথা বলেছিলেন। নিহতদের মধ্যে ১৬ জনের মৃতদেহ ইটন এলাকায় আর আটজনের মরদেহ পালিসেইডস এলাকায় পাওয়া গেছে।
লস অ্যাঞ্জেলসের তিনটি এলাকায় দাবানল এখনো চলছে। সবচেয়ে বড় দাবানলের শিকার হয়েছে পালিসেইডস, যেখানে প্রায় ২৩ হাজার একর এলাকা পুড়ে গেছে। অন্যদিকে ইটনে দ্বিতীয় বৃহত্তম দাবানলে প্রায় ১৪ হাজার একর এলাকা ভস্মীভূত হয়েছে।
এছাড়া হার্স্ট-এ পুড়েছে ৭৯৯ একর। তবে সেখানকার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। দমকলকর্মীরা যখন বড় দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে শুরু করেছে তখনই কর্তৃপক্ষ নতুন করে প্রচণ্ড বাতাসের বিষয়ে সতর্ক করলো, যা “সম্ভাব্য বিপর্যয়কর বাতাসে” পরিণত হতে পারে। এতে পুরো লস অ্যাঞ্জেলসই দাবানলের হুমকির মুখে পড়ল।
পাসাডেনার দমকল বিভাগের প্রধান চাদ অগাস্টিন বলেন, “দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আমরা আবারো সম্ভাব্য বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে পড়তে যাচ্ছি কারণ মঙ্গলবার বাতাসের গতি সর্বোচ্চ হতে পারে। আমরা কিছুটা অগ্রগতি অর্জন করলেও এর সমাপ্তির কাছেও আসতে পারিনি।”
লস অ্যাঞ্জেলস ফায়ার বিভাগের প্রধান ক্রিস্টিন ক্রাউলি ইভাকুয়েশন জোনগুলোর অধিবাসীদের সতর্ক থাকতে বলেছেন যাতে করে কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিলেই তারা সরে যেতে পারেন। একই সাথে তাদের এমনভাবে অবস্থান করতে বলা হয়েছে যাতে করে কর্মীদের কাজে প্রতিবন্ধকতা না হয়।
টোপাঙ্গা ক্যানিয়নের অধিবাসী অ্যালিস হুসুম বলেন, রাতে নতুন করে সেখানে আগুন শুরু হলেও তা দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। তবে তিনি ও তার প্রতিবেশীদের নিয়ে ভয়ে আছেন কারণ সেদিন বাতাস সবচেয়ে বেশি গতিতে বয়ে যেতে পারে।
আগুন রোববার নতুন করে ছড়িয়েছে যার কারণে সান ফার্নান্দো উপত্যকা ও নিকটবর্তী নাসার জেট প্রোপালসন ল্যাবরেটরি এলাকার কমিউনিটিগুলো হুমকির মুখে পড়েছে। রোববার দমকলকর্মীরা অ্যানগেলেস ন্যাশনাল ফরেস্ট এলাকায় নতুন আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। এলাকাটি গোপন প্রযুক্তিসহ যুক্তরাষ্ট্র মহাকাশ কর্মসূচি এলাকার সাথেই।
এদিকে যেসব এলাকা থেকে অধিবাসীদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে সেখানে লুটপাটের দায়ে অন্তত ২৯ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে দুজন দমকল কর্মী সেজে চুরি করছিল। বিবিসি বাংলা