স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে আওয়ামী লীগ থেকে উৎসাহিত করা হচ্ছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
টুইট ডেস্ক : বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, তাঁর কাছে তথ্য আছে, বিএনপির যাঁরা তারেক রহমানকে (বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) নেতা হিসেবে মানতে পারছেন না, তাঁরা নির্বাচনে আসবেন। আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপি না এলে নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক হবে কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমার কাছে তো ইনফরমেশন আছে, বিএনপির যাঁরা তারেক রহমানকে নেতা হিসেবে মানতে পারছেন না, তাঁর নেতৃত্ব নিয়ে অনেকেই কষ্ট পাচ্ছেন, তাঁরা কিন্তু ইতিমধ্যে নির্বাচনে আসবেন বলে আমরা জানি। তাঁরা আসার জন্য বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মও তৈরি করেছেন।
বিএনপির রাজনীতি, নেতৃত্ব বিএনপির নেতাদের অনেকের পছন্দ হচ্ছে না বলে তাঁরা দল ছেড়ে নতুন দল তৈরি করেছেন এবং এখান থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য সচেষ্ট হচ্ছেন। আমরা শুনছি, বিএনপির অনেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে। নির্বাচন সঠিক সময়ে অবশ্যই হবে। এ দেশের মানুষও ইতিমধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশে চলে এসেছেন। সবাই যাঁর যাঁর প্রার্থীকে কীভাবে পাস করাবেন, তা নিয়ে চিন্তা করছেন। কে নির্বাচনে এলেন না কিংবা কে কী বললেন, এগুলো নিয়ে এ দেশের মানুষের কোনো ধরনের ভাবনা বা উদ্বেগ নেই।
নিরাপত্তা বাহিনী নির্বাচন কমিশনের অধীন হয়ে গেছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশন যেভাবে দায়িত্ব পালন করতে বলছে, সেভাবেই তারা দায়িত্ব পালন করছে।
বড় ধরনের নাশকতার আশঙ্কা আছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে আসাদুজ্জামান খান বলেন, তিনি এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো খবর পাননি। আর এ ধরনের নাশকতা কেবল বাংলাদেশের মানুষ নয়, বিশ্বের কোনো সভ্য জগৎ পছন্দ করে না। কাজে যতই নাশকতা করবে, ততই তারা অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে, ততই তারা জনবিচ্ছিন্ন হবে। ততই সমর্থনের চেয়ে ধিক্কার অর্জন করবে।
সামনে বিএনপি কঠোর আন্দোলন করবে বলে শোনা যাচ্ছে-এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কঠোর আন্দোলন কী, আমি জানি না। আমরা তো দেখলাম, ট্রেনের লাইন কাটার জন্য তারা গিয়েছিল, জনগণ তাদের ধরিয়ে দিয়েছে। বাসে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করছে, দু-একটিতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে, তখন এ দেশের জনগণ ধরে পুলিশে দিয়েছে। এটাই প্রমাণিত হয় যে দেশের জনগণ সহিংসতা পছন্দ করে না, সুন্দর পরিবেশ দেখতে চায়।
বিএনপি নিশ্চিত পরাজিত হবে জেনে নির্বাচনে আসছে না বলে মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ (সবার জন্য সমান সুযোগ) আছে কি না, সে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনারা অপেক্ষা করেন, দেখবেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে কি না। রাজনৈতিক দলগুলো প্রচারণা চালাবেই। এখনো নামার সময় আসেনি। সবাই যার যার প্রার্থী নিয়ে আনন্দ করবে। মিছিল করবে।
বিএনপির বেশির ভাগ নেতা কারাগারে-এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যতজন নেতা কারাগারে আছেন, সুনির্দিষ্ট মামলা আছে তাঁদের নামে। বিনা অপরাধে কাউকে ধরা হয়েছে, এমন ঘটনা হয়নি।
নির্বাচন কমিশন বলছে, বিএনপি নির্বাচনে এলে ৭ জানুয়ারি (ভোট গ্রহণের দিন) ঠিক রেখে আগের তারিখ পেছাবে (মনোনয়নপত্র জমা, প্রত্যাহার ইত্যাদির সময়)। এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার। তাদের (বিএনপি) শুভবুদ্ধির উদয় হলে তিনি খুশি হবেন। সরকার পরিবর্তনে নির্বাচন ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে আওয়ামী লীগ থেকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। এবারের নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক করতে কি অনেক চ্যালেঞ্জ হচ্ছে-সে প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি তো কোনো চ্যালেঞ্জ মনে করি না। কেউ যদি না আসে, নির্বাচন থেমে থাকে না। নির্বাচন হয়েই যায়। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আওয়ামী লীগ একটি বিরাট দল।
যেমন তাদের সমর্থক, তেমন নেতা-কর্মী রয়েছেন। সবাইকে তো মনোনয়ন দিতে পারেননি আওয়ামী লীগ সভানেত্রী কিংবা আওয়ামী লীগ। তারপরও যাঁরা নির্বাচনের (অংশ নেওয়ার) উৎসাহ প্রকাশ করছেন, নির্বাচন করতেই যাচ্ছেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ইচ্ছা করলে স্বতন্ত্র দাঁড়াতে পারেন, কিন্তু সে ক্ষেত্রে নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে।
এতে কি বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে—এমন প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোনো অবনতি হবে না। সবাইকে আইনশৃঙ্খলা মেনে, নির্বাচন কমিশনের বিধিনিষেধ মেনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে।