সেরা ১২ পুত্রবধূ পেলেন সম্মাননা
টুইট ডেস্ক: মাদারীপুরে শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে থেকে তাদের সেবা ও যত্ন করার জন্য বিশেষ সম্মাননা পেয়েছেন ১২ জন পুত্রবধূ। ব্যতিক্রমী এ আয়োজনটি করেছে ‘পাশে আছি মাদারীপুর’ নামের একটি সামাজিক সংগঠন।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে মাদারীপুর শহরের লেকেরপাড়ে অবস্থিত সমন্বিত সরকারি অফিস ভবনের জেলা শিশু একাডেমি হলরুমে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। পুত্রবধূরা এই সম্মাননা পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন এবং তাদের সেবামূলক কাজ অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেন।
সম্মাননা প্রাপ্ত পুত্রবধূরা হলেন: আয়েশা সিদ্দিকা আকাশী, মরিয়ম অহিদ, রাবেয়া আক্তার মুক্তা, রিমা, সুরাইয়া আক্তার, সামসুন নাহার, আরিফা আফরোজ অন্তরা, সুলতানা রাজিয়া, ফারজানা, আছমা খাতুন, সাবিকুন্নাহার আক্তার এবং লাবণী আক্তার আশা।
এটি জেলায় প্রথমবারের মতো এমন একটি আয়োজন। পরিবারের ঐতিহ্য ধরে রাখা ও সম্পর্কগুলোকে আরও দৃঢ় করার লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়।
প্রথমে বিভিন্ন মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় এবং পুত্রবধূদের আবেদন আহ্বান করা হয়। প্রাপ্ত আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করা হয়। এরপর পাড়া-প্রতিবেশী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মতামত নিয়ে সেরা ১২ জন পুত্রবধূকে নির্বাচন করা হয়।
সম্মাননা স্মারক পাওয়া আয়েশা সিদ্দিকা আকাশী বলেন, “শ্বশুর-শাশুড়ি আর মা-বাবার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। আমি সারাজীবন তাদের সেবা করতে চাই। শ্বশুর-শাশুড়িকে আলাদা করে দেখার কিছু নেই।”
আরেকজন পুত্রবধূ রাবেয়া রহমান মুক্তা বলেন, “শ্বশুর-শাশুড়িকে ভালোবাসার মাধ্যমে আমি আমার মা-বাবাকে খুঁজে পাই। তাদের সেবা করে আমি আনন্দ পাই। এটি সব পুত্রবধূদেরই করা উচিত।”
পাঁচখোলা এলাকার বাসিন্দা হায়দার আলী খান তার পুত্রবধূ সুলতানা রাজিয়ার সেবার প্রশংসা করে বলেন, “তার যত্নে আমরা সবাই খুশি। এমন পুত্রবধূ পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার।”
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মাদারীপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর লুৎফর রহমান খান বলেন, “এ ধরনের আয়োজন অন্য পুত্রবধূদের উৎসাহিত করবে এবং শ্বশুর-শাশুড়ি ও পুত্রবধূদের মধ্যে দূরত্ব কমাবে। এটি সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”
অনুষ্ঠানের আয়োজক বায়েজিত মিয়া বলেন, “বর্তমান সমাজে অনেক শ্বশুর-শাশুড়ি কষ্টে দিন কাটান। তাদের পুত্রবধূদের আচরণে অনেকেই হতাশ। এই সম্মাননা সমাজে ইতিবাচক বার্তা ছড়াবে। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এ ধরনের আয়োজন করা হবে।”
সেরা পুত্রবধূদের সম্মাননা প্রাপ্তি শুধু তাদের নয়, তাদের শ্বশুর-শাশুড়ি ও পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও আনন্দের সঞ্চার করেছে। এমন উদ্যোগ সমাজে পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় করতে এবং সেবামূলক কাজের প্রতি উৎসাহিত করতে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।