রাজশাহীতে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিয়ে বিএনপির নেতার হুং’কার ভাইরাল
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর তানোরে বিএনপির কথা ছাড়া বাতাসও নড়বে না বলে হুংকার গিয়েছেন স্থানীয় এক বিএনপি নেতা। বলেছেন, উপজেলার সব অফিস চলছে বিএনপির নেতৃত্ব। টালবাহানা করলে কর্মকর্তাদের অবস্থা হবে আওয়ামী লীগ নেতাদের মত।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও চান্দ্রুরিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দিনের হুংকারের একটি ভিডিও নেট দুরিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) গভীর নলকূপের অপারেটর পদে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়োগ না হওয়ায় সংস্থার তানোর কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভকালে এ হুংকার দেন মফিজ উদ্দিন।
এ সময় বিএনপি নেতারা বিএমডিএর তানোর কার্যালয়ে তালাও লাগিয়ে দেয়। তবে সন্ধ্যায় সেনাবাহিনী গিয়ে চাবি নিয়ে কার্যালয়ের তালা খুলে দেয়।
বিএমডিএর কার্যালয়ে তালা লাগানোর পর মফিজ উদ্দিন বলেন, ‘১৫ বছর অনেক নির্যাতিত হয়েছি। আর হতে চাই না। আমরা চাই তানোরে বিএনপির কথার বাইরে বাতাসও নড়বে না। কিসের টিএনও অফিস, কিসের কৃষি অফিস আর কিশের বরেন্দ্র অফিস এখন থেকে চলবে বিএনপির নেতৃত্বে। আর আগামীতে আমাদের ব্যারিষ্টার আমিনুল হকের সহদর ছোট ভাই (মেজর জেনারেল (অব.) শরিফ উদ্দীন) ওনার পরামর্শে এই তানোর উপজেলার প্রশাসন চলবে। কোন কর্মকর্তা যদি টাল বাহানা করে তাকে ভাবতে হবে; তার অবস্থা কিন্তু এই জালিদের (আওয়ামী লীগ নেতা) মত হবে।’
এর পরের দিন বৃহস্পতিবার একই দাবিতে বিএনপির ব্যানারে বিএমডিএর গোদাগাড়ী জোন-১ এর কার্যালয় ঘেরাও করে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা গভীর নলকূপের অপারেটর পদে নিয়োগ স্থগিত করতে রোববার পর্যন্ত তিনদিনের আল্টিমেটাম দেয়।
এ সময় গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘হাসিনার দুঃশাসন আমরা সহ্য করেছি। এখন আমরা আল্লাহর রহমতে সুদিন পেয়েছি। কিন্তু হাসিনার দোসরেরা বিএনপির নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না করে তার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। আগামী রোববারের মধ্যে যদি বিএমডিএ এই নিয়োগ স্থগিত না করা হয়, তাহলে আমরা বৃহৎ কর্মসূচি দেব।’
বিএমডিএ সূত্রে জানা গেছে, গোদাগাড়ীতে ৪৫০ ও তানোরে ৫৩৬টি গভীর নলকূপ আছে। সম্প্রতি এসব গভীর নলকূপের আগের অপারেটরদের নিয়োগ বাতিল করা হয়। এরপর নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শুধু মৌখিক পরীক্ষার পরই অপারেটর নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। সদর দপ্তরের একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে। এরপর ৩১ ডিসেম্বর নির্বাচিতদের তালিকা প্রকাশ করা হয় বিএমডিএর সদর দপ্তর থেকে। এরপরই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন দুই উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা।
গোদাগাড়ী বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী আবদুল লতিফ বলেন, ‘উচ্চপর্যায়ের একটা কমিটি ভাইভা গ্রহণ করেছে। তারা যোগ্যদের নির্বাচিত করেছেন। এখন যে ঝামেলা হচ্ছে সেটা ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’
আওয়ামী সরকারের পতনের পর বিএমডিএ’র চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) শরিফ উদ্দীনের ভাই ড. মো. আসাদ উজ জামান। তার আরেক ভাই প্রয়াত ব্যরিস্টার আমিনুল হক বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। কয়েক মেয়াদে ছিলেন বিএনপির এমপি ও মন্ত্রী। তাদের বাড়ি গোদাগাড়ীতে।