আমনের মৌসুমেও অস্থির চালের বাজার, কারসাজিতে কারা?

টুইট ডেস্ক: দেশে এখন আমনের ভরা মৌসুম। অথচ এর সুফল নেই বাজারে। পাইকারি এবং খুচরা পর্যায়ে দাম উর্ধ্বমূখী। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারিতে ৫০ কেজির বস্তাপ্রতি দাম বেড়েছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। এর প্রভাবে খুচরা পর্যায়ে মিনিকেটের দাম ৭ থেকে ৮ টাকা আর মোটা ও মাঝারি চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা।

দাম বৃদ্ধির জন্য খুচরা, পাইকারি এবং মিল-মালিকরা দুষছেন একে অপরকে। দোষারোপের খেলায় নাকাল ক্রেতারা। এদিকে, ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চড়া দাম আর ডলারের উচ্চমূল্যের কারণে বাড়ছে আমদানি জাতের মূল্য।

এ বিষয়ে ক্রেতা বলেন, আমাদের একটা বাজেট থাকে। মাসে কত টাকা কোন খাতে ব্যয় করবো সেটির। কিন্তু কোনো দ্রব্যের দাম হঠাৎ বেড়ে গেলে সেই ঘাটতি মেটানো কষ্টকর হয়ে যায়। তারপরও কিনতেই হবে, না খেয়ে তো আর থাকা যায় না।

বাজারে এখন সবচেয়ে কম দামি চাল গুটিস্বর্ণা। এই চাল কেজিতে ৪ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকায়। পাইজাম ৫৮ আর মিনিকেটের জন্য গুণতে হচ্ছে মানভেদে ৭২ থেকে ৭৮ টাকা। ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজির নিচে মিলছে না নাজিরশাইল। খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরদের অভিযোগ, মিলাররা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে।

এ বিষয়ে এক বিক্রেতা বলেন, মিলে দাম বেড়েছে। তারা চাল দিতে চায় না, অনেকে নতুন অর্ডারও নিচ্ছে না।

ধানের চড়া দামের অজুহাত তুলছেন আড়তদাররা। পাশাপাশি দাম বৃদ্ধির জন্য গুটিকয়েক করপোরেট প্রতিষ্ঠানের কারসাজিকেও দায়ী করছেন তারা।

এ বিষয়ে এক আড়তদার যমুনা টেলিভিশনকে বলেন, মিলাররা চালের দাম অস্বাভাবিক বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা এতটা না বাড়ালেও পারতো। এক-দুইদিনের ব্যবধানে দুইশ থেকে চারশো টাকা দাম বাড়ার ইতিহাস কখনও নেই।

তবে স্থানীয় উৎপাদনে চালের চাহিদা মিটছে না বলে দাবি করেছেন মিল মালিকরা। তারা বলছেন, আমদানি করা চালের বাড়তি দাম এবং ডলারের উচ্চমূল্যের প্রভাব পড়ছে দামে।

বিষয়টি নিয়ে ফরহাদ হোসেন চকদার নামের এক মিল মালিক বলেন, আমদানি করা পণ্য খুব ধীরে দেশে আসছে। তাছাড়া সেগুলোর দামও চড়া। এর প্রভাব দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে পড়েছে। আমদানিতে খরচ কমলে দেশের বাজারেও দাম কমবে।

মোস্তাফিজার রহমান নামের এক আমদানিকারক বলেন, ডলারের দাম বাড়ার ফলে আমাদের আমদানি খরচ বেড়েছে। এজন্য খুচরা পর্যায়ে দাম বেড়েছে। ডলারের দামের লাগাম টানতে পারলে বাজারে স্বস্তি ফিরবে।

প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রায়াত্ত্ব সংস্থা টিসিবির তথ্য বলছে, এক বছরের ব্যবধানে চিকন ও মাঝারি চালের দাম বেড়েছে ১৪ শতাংশ। আর মোটা চালের দাম বেড়েছে ৭ শতাংশের বেশি।