বাংলাদেশ ইস্যুতে দিল্লির সাথে থাকার আশ্বাস দিয়েও প্রকাশ্য দ্বন্দ্বে মমতা-শুভেন্দু
টুইট ডেস্ক: বাংলাদেশ প্রসঙ্গে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যের বিরোধী দলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী। পররাষ্ট্রনীতিতে রাজ্য সরকারের মন্তব্য ন্যায়সঙ্গত নয় উল্লেখ করে দুজনই একই সুরে কথা বলেছিলেন। এরপরেও সংখ্যালঘু ইস্যুর সাথে রাজ্যের আগামী নির্বাচন- অনেকটা এই মোড়কেই দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন এই দুই নেতা।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দীঘায় জগন্নাথ দেবের মন্দিরের নির্মাণ কাজ কতদূর এগিয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে মন্দির পরিদর্শন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এসময় গণমাধ্যমে কথা বলার সময় বাংলাদেশ প্রসঙ্গে মুখ খোলেন তিনি।
নিজের বক্তব্যে রাজ্যের কিছু গণমাধ্যমের কর্মকাণ্ডকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করান মমতা। বলেন, কিছু ফেক ভিডিও চলছে। ভারত সরকার প্রতিনিধি পাঠিয়েছে বাংলাদেশে। এটা কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয়, আমাদের দেখার কথা নয়।
এসময় ভিসা প্রক্রিয়ায় কিছুটা শিথিলতা আনা হয়েছে উল্লেখ করে মমতা বলেন, আমি শুনেছি বাংলাদেশে ভিসা আরও বাড়ানো হয়েছে যাতে ওপার বাংলার মানুষ বেশি করে এপারে আসতে পারে। আমাদের লোকেদেরও ফিরিয়ে আনা হোক, যারা আসতে চায়।
পুনরায় পররাষ্ট্রনীতির বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিস্কার করেন মমতা। বলেন, এটা ভারত সরকারের বিষয়; পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিষয় নয়। এই ইস্যুকে মিসলিড করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ আনেন মমতা। তবে প্রতিবেশী দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়ে থাকলে তার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারকে এ বিষয়ে কাজ করতে আহ্বান জানান তিনি। সীমান্তে নজরদারি রয়েছে, সেখানেও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে না।
তবে মমতার এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী। বাংলাদেশ প্রসঙ্গে মমতার আচরণ অনেকটা দ্বিচারিতার মতো উল্লেখ করে শুভেন্দু দাবি করেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু মুসলমান সম্প্রদায়ের সঙ্গে প্রতারণা করছেন।
শুভেন্দু বলেন, সরকারি অর্থায়নে কোন মন্দির-মসজিদ গির্জা করা যায় না। কিন্তু মমতা সরকারি কোষাগার থেকে অর্থ নিয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দীঘা পর্যটন কেন্দ্রে উড়িষ্যার পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে একটি নকল করে মন্দির তৈরি করেছেন। এটা হিন্দু শাস্ত্র বিরোধী।
এসময় রাজ্যের হিন্দুরা মমতার কাজকে ভালো চোখে নিচ্ছেন না উল্লেখ করে ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমুলের জনপ্রিয়তায় ধস নাববে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, ভোটের আগে অতি হিন্দুপ্রেমী সাজতেই মমতা এইসব করছেন।