শেখ হাসিনা পতনের আগে ৬০ হাজার কোটি টাকা ছাপানোর অভিযোগ
টুইট ডেস্ক: ক্ষমতা হারানোর আগেও পাচারের উদ্দেশ্যে ৬০ হাজার কোটি টাকা ছাপানোর অভিযোগ উঠেছে শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে। রোববার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ অভিযোগ প্রকাশ করেন।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, অর্থনৈতিক শ্বেতপত্রে মহাচুরি, দুর্নীতি এবং অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। সকালে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তেজগাঁও কার্যালয়ে এ শ্বেতপত্রের খসড়া রিপোর্ট হস্তান্তর করেন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “ক্ষমতা হারানোর আগে শেখ হাসিনা সরকার এস আলম গ্রুপের মতো কিছু প্রতিষ্ঠানের সুবিধার্থে ৬০ হাজার কোটি টাকা ছাপিয়েছিল। অর্থনৈতিক অনিয়মের শ্বেতপত্রে উন্নয়নের বয়ানের পোস্টমর্টেম করা হয়েছে, যা দেশের অর্থনীতির ভঙ্গুর চিত্র ফুটিয়ে তুলেছে। আমরা আতঙ্কিত। এই লুটপাটের চিত্র পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত।”
শ্বেতপত্রে উঠে এসেছে, দেশের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৩০ শতাংশ হতে পারে। এই বিপুল অর্থের লুটপাটে রাজনীতিক, আমলা এবং কিছু ব্যবসায়ীর জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির মতে, এসব অর্থ পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিচারের আওতায় আনতে এবং বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ফেরানোর জন্য সরকার সক্রিয়। এ বিষয়ে এফবিআইসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
প্রেস সচিব আরও বলেন, “সরকার সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে দ্রব্যমূল্য ধরে রাখতে প্রতিনিয়ত কাজ করছে। সিন্ডিকেট ভাঙতে শুল্ক কমানোসহ সরবরাহ বাড়ানোর নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে নতুন টাকা ছাপানোর ফলে মুদ্রাস্ফীতির ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না।
অর্থনৈতিক শ্বেতপত্রে উত্থাপিত অভিযোগ এবং সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে জনমনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। শ্বেতপত্র প্রকাশিত হওয়ার পর অর্থনৈতিক সুশাসন নিশ্চিত করার দাবি জোরালো হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শ্বেতপত্রের তথ্য দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা ও রাজনৈতিক শুদ্ধি অভিযানের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করবে। সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের সফলতা নির্ভর করবে এই প্রতিবেদন অনুসরণ করে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর।