রাতভর ঘূর্ণিঝড় ফিনজালের তাণ্ডব, প্রাণহানি-জলাবদ্ধতা
টুইট ডেস্ক: ভারতে আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় ফিনজাল। শনিবার (৩০ নভেম্বর) দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুর উত্তরাঞ্চল এবং পুদুচেরিতে রাতভর তাণ্ডব চালিয়েছে এই ঘূর্ণিঝড়।
পরে রোববার (১ ডিসেম্বর) সকালে শক্তি হারিয়ে এটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এছাড়া চেন্নাইতে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সংবাদমাধ্যম বলছে, রাতভর তাণ্ডব চালানোর পর রোববার সকালে শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে ঘূর্ণিঝড় ফিনজাল। এখন তা অবস্থান করছে পুদুচেরির কাছেই। তবে রোববার বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে আরও শক্তিক্ষয় করে এই গভীর নিম্নচাপ সাধারণ নিম্নচাপে পরিণত হবে বলে জানিয়েছে দেশটির আবহাওয়া দপ্তর।
অবশ্য এর প্রভাবে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত দক্ষিণ ভারতের একাধিক রাজ্যে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
এর আগে শনিবার রাতে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর থেকে তামিলনাড়ুর উপকূল হয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করে ‘ফিনজাল’। এরপর গভীর রাত পর্যন্ত ‘ল্যান্ডফল’ বা আছড়ে পড়ার প্রক্রিয়া চলে। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, রাত আড়াইটা পর্যন্ত ‘ফিনজাল’ তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরির ওপর দিয়ে ঘণ্টায় সাত কিলোমিটার গতিতে এগিয়েছে।
এই ঘূর্ণিঝড়ের অভিমুখ ছিল দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে। পরে ভোর সাড়ে ৫টার মধ্যে শক্তি হারিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি পরিণত হয় গভীর নিম্নচাপে। এর প্রভাবে তামিলনাড়ুর উপকূল এলাকায় ঝড়ের সর্বোচ্চ বেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার। চেন্নাইয়ে ‘ফিনজালের’ কারণে এক জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
চেন্নাইয়ে মৃত ওই ব্যক্তি পেশায় একজন শ্রমিক। তিনি রাতে ঝড়ের সময়ে এটিএম থেকে টাকা তুলতে গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। সেই সময়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। পরে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এদিকে ঝড়ের কারণে রোববার ভোর পর্যন্ত চেন্নাই বিমানবন্দর বন্ধ রাখা হয়েছিল। ভোর ৪টার পর আবারও বিমান ওঠানামা শুরু হয়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ শনিবার জানিয়েছিলেন, সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চেন্নাই বিমানবন্দর বন্ধ থাকবে। কিন্তু সন্ধ্যায়ও ঝড়ের দাপট বেশি থাকায় ফ্লাইট চলাচল শুরু করা যায়নি।
অবশ্য বৃষ্টিতে চেন্নাইয়ের বিমানবন্দরের একাংশ জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বাতিল করা হয়েছে অনেক ফ্লাইট। এর ফলে যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। চেন্নাইগামী কিছু বিমান অন্য শহরের দিকেও ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। রোববার সকাল থেকে আকাশপথে চলাচল স্বাভাবিক করা যাবে বলে আশাবাদী কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে উপকূল সংলগ্ন চেন্নাইয়ের বিস্তীর্ণ অংশ এখনও পানিতে তলিয়ে আছে। পুদুচেরিতেও ডুবে গেছে নিচু এলাকা। অনেক স্কুল এবং হাসপাতালও জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ব্যাহত হয়েছে ট্রেন চলাচল। ঝড়ের কথা মাথায় রেখে আগেই তামিলনাড়ু সরকার পদক্ষেপ নিয়েছিল। শনিবার স্কুল-কলেজ-অফিস বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
এদিকে ফিনজাল দুর্বল হলেও এখনই বৃষ্টি থামছে না চেন্নাইতে। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, তামিলনাড়ু, পুদুচেরি, দক্ষিণ কর্নাটক এবং কেরালায় আগামী ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি চলতে পারে। অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে রোববার।