জুরাইনে রিকশাচালকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : রাজধানীর জুরাইনে সড়ক ও রেললাইনে অবস্থান নেওয়া ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। রিকশাচালকদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এক পর্যায়ে কাঁদুনে গ্যাসও ছুড়েছে পুলিশ।

ঢাকা মহানগরে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে উচ্চ আদালতের নির্দেশের প্রতিবাদে শুক্রবার তৃতীয় দিনের মত চালকরা রাস্তায় নামেন।

শ্যামপুর থানার এসআই নাজমুন নাহার বলেন, রিকশাচালকরা বেলা ১১টা থেকে জুরাইন এলাকার সড়ক ও রেললাইন অবরোধ করে তাদের কর্মসূচি শুরু করেন।

রেললাইন আটকে তাদের এই বিক্ষোভের কারণে পদ্মাসেতু হয়ে দক্ষিণের পথে রেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায় বলে কমলাপুর স্টেশনের মাস্টার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান।

তিনি বলেন, “রিকশা চালকরা বেলা ১১টা থেকে রেললাইনে অবস্থান করে বিক্ষোভ করছে। তখন থেকে ওই লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।“

দুপুর ১টার দিকে পুলিশ রিকশাচালকদের সড়ক ছেড়ে দিতে বললে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয় বলে এসআই নাহার জানান। তিনি বলেন, পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিকাল ৩টা পর্যন্ত রিকশাচালকরা বিচ্ছিন্নভাবে সড়কে অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

প্যাডেল চালিত রিকশা সমিতি করা একটি রিটের প্রাথমিক শুনানির পর হাই কোর্ট মঙ্গলবার ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের ওই আদেশ দেয়।

স্বরাষ্ট্র সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, আইজিপি, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের আদালতের এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।

ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করে হাই কোর্ট।

আদালত বলে, “ব্যাটারিচালিত রিকশার লাইসেন্স নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাই এটা পুরোপুরি অবৈধ।”

রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক খালেকুজ্জামান লিপন বুধবার এক বিবৃতিতে হাই কোর্টের দেওয়া আদেশ প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।

এর পরদিনই বুধবার ঢাকার সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল অব্যাহত রাখার দাবিতে দয়াগঞ্জ মোড়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন রিকশাচালকরা।

বৃহস্পতিবার ঢাকার মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধসহ মিরপুর, মালীবাগ, মোহাম্মদপুর, গাবতলী, আগারগাঁও, নাখালপাড়া, রামপুরা, খিলগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকরা বিক্ষোভ দেখান।

এর আগে গত মে মাসে ঢাকার সড়কে ব্যাটারিচালিত কোনো রিকশা চলাচল করতে পারবে না বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বিদ্যুৎচালিত তিন চাকার যানগুলো অটো, ইজিবাইকসহ নানা নামে পরিচিত। দুর্ঘটনার জন্য সড়কে মোটরবাইক এবং ইজিবাইকের চলাচলকে দায়ী করেন তিনি।

পরে ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ঢাকায় সড়ক অবরোধ করেন চালকরা ও গ্যারেজ মালিকরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংক্ষুব্ধ চালকদের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটে।

পরে ‘জীবিকার’ বিষয়টি বিবেচনায় এনে ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করবে পারবে বলে ঘোষণা দেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।