আমেরিকায় ঘুষ-জালিয়াতি: আদানির সঙ্গে চুক্তি বাতিল করল কেনিয়া

টুইট ডেস্ক: ভারতের অন্যতম শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ঘুস-জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ঘটনার পর আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিমানবন্দর ও বিদ্যুৎ সঞ্চালন প্রকল্পের দুটি বড় চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে কেনিয়া। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) কেনিয়ান পার্লামেন্টে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এই সিদ্ধান্ত জানান দেশটির প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো।

বাতিল হওয়া প্রথম চুক্তিটি ছিল প্রায় ২০০ কোটি ডলারের। এর আওতায় নাইরোবির জোমো কেনিয়াট্টা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দ্বিতীয় রানওয়ে নির্মাণ এবং যাত্রী টার্মিনালের উন্নয়ন করার বিনিময়ে আদানি গ্রুপ ৩০ বছরের জন্য বিমানবন্দরটির নিয়ন্ত্রণ পেতো।

দ্বিতীয় চুক্তি ছিল বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নির্মাণের জন্য। ৭৩ কোটি ৬০ লাখ ডলারের চুক্তিটি গত মাসেই স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

রুটো বলেন, পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং জ্বালানি ও খনিজ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে আমি নির্দেশ দিয়েছি চলমান ক্রয় প্রক্রিয়া অবিলম্বে বাতিল করতে। এই সিদ্ধান্ত তদন্ত সংস্থা ও সহযোগী দেশগুলোর সরবরাহকৃত নতুন তথ্যের ভিত্তিতে নেওয়া হয়েছে।

কেনিয়ায় বিমানবন্দর প্রকল্পের প্রস্তাবটি আদানি গ্রুপ গত মার্চ মাসে জমা দেয়। প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র প্রক্রিয়া এড়িয়ে এটি করা হয়েছিল। বিষয়টি গত জুলাই মাসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাঁস হলে ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়।

সেপ্টেম্বরে একটি কেনিয়ান আদালত চুক্তিটি সাময়িকভাবে স্থগিত করে। কারণ, চুক্তিটি করদাতাদের জন্য লাভজনক নয় বলে অভিযোগ উঠেছিল।

এছাড়া, ২০২৩ সালে মার্কিন শর্ট-সেলার হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিল। যদিও আদানি গ্রুপ সেসব অভিযোগ অস্বীকার করে।

মার্কিন কর্মকর্তারা গত বুধবার আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানি এবং তার ঘনিষ্ঠ আরও সাতজনের বিরুদ্ধে প্রায় ২৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার ঘুস দিয়ে ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করার অভিযোগ আনেন।

আদানি গ্রুপ যুক্তরাষ্ট্রের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং বলেছে, তারা ‘সব ধরনের আইনি পদক্ষেপ নেবে’। তবে কেনিয়া সরকারের চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি সংস্থাটি।

কেনিয়ার আইন বিশেষজ্ঞ জর্জ কামাউ বলেছেন, আদানি গ্রুপ আরবিট্রেশনে যেতে পারে, বিশেষ করে বিদ্যুৎ সঞ্চাল প্রকল্পের চুক্তি নিয়ে, যা এরই মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল। তবে সততা সংক্রান্ত ইস্যুর কারণে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রের পক্ষেই যাবে বলে মত তার।