স্মার্ট রাজশাহী সিটি গড়তে নয় হাজার কোটি টাকার ২০ প্রকল্পের প্রস্তাব
নিজস্ব প্রতিবেদক : স্মার্ট রাজশাহী সিটি নির্মাণে ২০টি প্রকল্পের প্রস্তাব এসেছে। যাতে ব্যায় ধরা হয়েছে নয় হাজার ২৯১ কোটি টাকা। স্মার্ট রাজশাহী সিটি সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়নে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ডিজাইন ল্যাব’ এর সমন্বিত পরিকল্পনায় এ প্রস্তাব এসেছে। গত বৃহস্পতিবার রাজশাহীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্কের জয় সিলিকন টাওয়ারে আয়োজিত মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন নিকট স্মার্ট রাজশাহী বিনির্মাণের কার্যক্রম সম্বলিত বই হস্তান্তর করা হয়।
অনুষ্ঠানে স্মার্ট রাজশাহী কর্মসংস্থান মেলায় নিয়োগপ্রাপ্ত তিনজনের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এছাড়া অনুষ্ঠানে স্মার্ট রাজশাহী ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীকে পুরস্কার প্রদান করা হয়।
এই পরিকল্পনা প্রণয়নের কার্যক্রমর্টিতে শতাধিক গবেষক, শিক্ষক, সরকারি কর্মকর্তা, তরুণ প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞগণ অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে স্মার্ট রাজশাহী সিটি বিনির্মানে-সমন্বিত পরিকল্পনা উপস্থাপনা করেন প্রধান পরিকল্পক ও উপস্থাপন সমন্বয়ক, স্মার্ট রাজশাহী সিটি ও চীফ ই-গভর্নেন্স, এটুআই, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের জনাব ফরহাদ জাহিদ শেখ। উক্ত ডিজাইন ও পরিকল্পনা ল্যাব হতে ১৬১ টি উদ্যোগ ডিজাইন এবং ডিজাইনকৃত উদ্যোগ হতে প্রায় ২০টি প্রকল্প বের করা হয়, যা প্রস্তাবিত বাজেট প্রায় ৯২৯১ কোটি টাকা।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন তাঁর বক্তব্যে “স্মার্ট বাংলাদেশ ডিজাইন ল্যাব” এর কার্যক্রমের ভূয়াসী প্রশংসা করে তার কার্যকারী দিক তুলে ধরেন এবং রাজশাহী সিটি বিনির্মানে গৃহীত পরিকল্পনা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করার কথা জানান।
রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, স্মার্ট রাজশাহী সিটি সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়নে যে ধারণাপত্র আমরা পেলাম, তার কতোগুলো বাস্তবায়ন করতে পারব জানি না। তবে আমি আমার মেয়াদকালে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো পর্যায়ক্রমে যত বেশি সম্ভব কম্পনেন্ট গুলো বাস্তবায়ন করতে।
রাসিক মেয়র বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করছেন তিনি। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পর এবার আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানের স্বপ্ন দেখছি।
রাসিক মেয়র আরো বলেন, মাত্র ছয়দিনে এই রকম একটি পরিকল্পনা প্রণয়ণ করে দেওয়া সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমরা যত বেশি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারবো, রাজশাহী তত এগিয়ে যাবে। রাজশাহী এগিয়ে গেলে বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও সেটি অল্প হলেও সেটি কাজে লাগবো।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি রাজশাহীর নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও স্মার্ট ডিজাইন পরিকল্পনা ল্যাবের সাফল্যের কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের আর্কিটেক্ট মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পর স্মার্ট বাংলাদেশের বিনির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন। স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট সিটি হবে যখন যেখানে দরকার সেখানে থাকবে স্মার্ট সরকার। সরকারের কোন সেবা পাওয়ার জন্য সিটি কর্পোরেশন, কোন দপ্তরে স্বশরীরে যেতে হবে না। স্মার্ট ফোনে মানুষের হাতের মুঠোয় থাকবে সরকারি সেবা। আমরা আশা করি ২০৪১ সালের অনেক আগেই রাজশাহী স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে উঠবে। রাজশাহী সিটি হবে সারা বংলাদেশের মডেল সিটি।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজশাহীতে হাইটেক পার্ক করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী রাজশাহীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটের্ক পার্ক নির্মিত হয়েছে। রাজশাহী শিক্ষানগরী থেকে ধীরে ধীরে সিলিকন সিটিতে পরিণত হচ্ছে। রাজশাহীতে ঘরে বসে অনেক তরুণ-তরুণী ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমের ডলার আয় করছে।
রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এ.বি.এম শরীফ উদ্দিন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। বিশেষজ্ঞ পরামর্শক হিসেবে বক্তব্য রাখেন এটুআই এর পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক), জনাব আহমদ আল মঈন। অনুষ্ঠানে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাগণ ও এটুআই, আইসিটি ডিভিশনের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভাসিটির লেকচাররা নবনীতা চক্রবর্তী।
প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক নির্দেশিত স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে স্মার্ট রাজশাহী সিটি রুপান্তরের লক্ষ্যে ০৮ আগস্ট ২০২৩ তারিখে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন ও এটুআই, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্মার্ট রাজশাহী সিটি সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়নে ৬ দিনব্যাপী ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ডিজাইন ল্যাব’ অনুষ্ঠিত হয়।