নতুন কারিকুলাম বাতিল ও পরীক্ষা পদ্ধতি চালুসহ ৮ দফা দাবিতে মানববন্ধন

টুইট ডেস্ক : রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আজ শুক্রবার নতুন কারিকুলাম বাতিল ও পরীক্ষা পদ্ধতি চালুর এবং মূল্যায়ন পদ্ধতি পরিবর্তনের দাবিতে ‘সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলন’ নামক একটি সংগঠনের অধীনে জনসভা অনুষ্ঠান করা হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে প্রায় দুই শতাধিক অভিভাবক, শিক্ষক ও সমাজবাদী চিন্তাধারার বিশেষজ্ঞরা যোগ দিয়েছে। অভিভাবক মহল ৮ দফা দাবি পেশ করেছেন ।

ফেসবুকভিত্তিক সংগঠনটির আহ্বায়ক রাখাল রাহা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক নাসির আহমেদ এই অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। তিনি বলেন দাবির জন্য ফেসবুক ভিত্তিক এই সংগঠনের আহ্বান পেয়ে তারা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন।

রাহা অত্যন্ত গম্ভীরভাবে বলেন, একটি কারিকুলাম প্রণয়নে বিভিন্ন মহলে আলোচনা এবং শিক্ষার্থীদের জন্য উপযোগী কি না সেটি ভাবার প্রয়োজন ছিল। সংসদে ও মন্ত্রিপরিষদে এ কারিকুলামে আলোচনা হওয়ার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু এসব হয়েছে কি না আমরা জানি না। যদি হতো তাহলে এমন কারিকুলাম প্রণয়ন করা হতো না।


সংগঠনের প্রতিনিধিরা তাদের বক্তব্যে বলেছেন, যে ইন্ডিকেটর দিয়ে বাচ্চাদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে, সেটি তো প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রযোজ্য। যারা পড়তে জানে না, সংখ্যা চেনে না তাদের এসব ইন্ডিকেটর শেখাতে হয়। কিন্তু আমাদের বাচ্চাদের এসব শিখিয়ে তাদের প্রতিবন্ধী করা হচ্ছে।


তিনি বলেন, আহ্বান থাকবে অবিলম্বে আমাদের শিক্ষার্থী ও জাতি ধ্বংসের এই কারিকুলামের প্রকল্পগুলো বন্ধ করুন। দেশের পরবর্তী প্রজন্মকে বাঁচাতে হলে শীঘ্রই নতুন কারিকুলাম বন্ধ হতে হবে।

সমাবেশে অভিভাবক পরিচয় দেয়া ব্যক্তিরা নতুন কারিকুলামে শিক্ষার্থীদের দলগত ও ডিভাইসমুখী হতে অনুৎসাহিত করতে হবে এবং তাদের অধ্যায়নমুখী করতে হবে বলে দাবি করেন।

অনুষ্ঠানে অভিভাবকরা আরও বলেন, নতুন এ কারিকুলামে আমাদের ব্যয়ও বাড়ছে। আমরা এত ব্যয় কুলিয়ে উঠতে পারছি না। প্রতিদিন কাগজ, কলম ও পেন্সিলের পাশাপাশি এখন নতুন নতুন সরঞ্জাম যুক্ত করা হচ্ছে। শিক্ষা ব্যয়ের দিকেও রাষ্ট্রকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলনের দাবিগুলো হলো-

১. শিক্ষানীতি বিরোধী’ নতুন কারিকুলাম সম্পূর্ণ বাতিল করতে হবে।
২. নম্বরভিত্তিক দুটি সাময়িক লিখিত পরীক্ষা (৬০ নম্বর) চালু রাখতে হবে এবং ধারাবাহিক মূল্যায়ন হিসেবে ৪০ নম্বর রাখতে হবে।
৩. নবম শ্রেণি থেকেই শিক্ষার্থীর আগ্রহ অনুযায়ী বিষয় নির্বাচনের সুযোগ অথবা বিজ্ঞান বিভাগ রাখতে হবে।
৪. ত্রিভুজ, বৃত্ত, চতুর্ভুজ ইত্যাদি নির্দেশক বা ইন্ডিকেটর বাতিল করে নম্বর ও গ্রেডভিত্তিক মূল্যায়ন পদ্ধতি রাখতে হবে।
৫. সবসময় সব শিখন, প্রোজেক্ট ও অভিজ্ঞতাভিত্তিক ক্লাসের ব্যয় সরকারকে বহন করতে হবে এবং স্কুল পিরিয়ডেই সব প্রোজেক্ট সম্পন্ন হতে হবে।
৬. শিক্ষার্থীদের দলগত ও প্রোজেক্টের কাজে ডিভাইসমুখী হতে অনুৎসাহিত করতে হবে এবং তাত্ত্বিক বিষয়ে অধ্যয়নমুখী করতে হবে।
৭. প্রতিবছর প্রতি ক্লাসে নিবন্ধন ও সনদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে, প্রাথমিক ও জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা চালু রাখতে হবে এবং এসএসসি ও এইচএসসি দুটি পাবলিক পরীক্ষা বহাল রাখতে হবে।
৮. সবসময় সব শ্রেণিতে নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের আগে অবশ্যই তা মন্ত্রিপরিষদ ও সংসদে উত্থাপন করতে হবে।

সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলনের ফেসবুক পেজে ৩১হাজর সদস্য অর্ন্তভূক্ত আছে বলে অভিভাবকমহল দাবী করেছেন। তাদের ফেসবুক পেজে দেখা যায়, সমাজের বিভিন্ন পেশার নারি ও পুরষ এই সংগঠনের দাবীকে সমর্থন দিয়ে সদস্য হয়েছেন।