পকেট থেকে মেয়েদের বোনাস দিচ্ছেন বাফুফে’র কর্মকর্তারা
টুইট ডেস্ক : ২০২২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বরের পর এ বছরের ৩০ অক্টোবর নারী সাফ ফাইনালে মনিকা-ঋতুপর্ণার গোলে আবারও চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। সাবিনাদের এর মধ্যেই পুরস্কৃত করেছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।
দেশে ফেরার দিনই এক কোটি টাকার চেক হাতে তুলে দিয়েছেন যুব ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এদিকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনও দিয়েছে বড় বোনাসের ইঙ্গিত। আজ নবনির্বাচিত নির্বাহী কমিটির প্রথম সভায় হবে সিদ্ধান্ত, আসবে ঘোষণাও।
শোনা যাচ্ছে বাফুফের পক্ষ থেকে থেকে দেড় কোটি টাকা বোনাস দেয়া হবে মেয়েদের। এর বাইরেও বিবিধসহ ২৭টি এজেন্ডা থাকছে নির্বাহী কমিটির প্রথম সভায়। গঠিত হতে পারে বেশ কয়েকটি স্ট্যান্ডিং কমিটি।
তবে বাংলাদেশের নারী ফুটবল নিয়ে সমস্যার অন্ত নেই। সাফ খেলতে যাওয়ার আগে সাবিনারা সেপ্টেম্বর মাসের বেতন পাননি। এক বছর ধরেই বেতন অনিয়মিত। দুই-তিন মাস পর এক মাসের বেতন পেয়েছেন। সাবিনা, কৃষ্ণা ও সানজিদারা মাসে ৫০ হাজার টাকা পান।
বাফুফে নতুন চুক্তিতে একাদশে থাকলে ১০ হাজার টাকা ম্যাচ ফি নির্ধারণ করেছে। সেই ফিও থাকে বকেয়া। মেয়েরা আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগও ঠিকমতো পায় না। প্রিমিয়ার লিগের দলগুলো নারী দল গঠনে অনাগ্রহী। তাতে পেশা হিসেবে ফুটবলকে বেছে নিতে ভরসা পান না মেয়েরা। সব মিলিয়ে নারীরা দেশের জন্য নিয়মিত সাফল্য এনে দিয়েও বড্ড বেশি অবহেলিত।
গত ২৬শে অক্টোবর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বিদায় নিয়েছেন ১৬ বছর ফুটবল শাসন করা কাজী সালাউদ্দিন। তার স্থলাভিষিক্ত তাবিথ আউয়াল প্রথম সভায় বসবেন সহযাত্রীদের নিয়ে। নবনির্বাচিত কমিটিতে নতুন মুখের সংখ্যাই বেশি। নির্বাচিত ১৪ সদস্যের মধ্যে সাত জন নতুন মুখ। পুরোনোও আছেন সাতজন। চার সহ-সভাপতির চার জনই নতুন। পুরোনোর মধ্যে তাবিথ আউয়ালের ভরসা সিনিয়র সহ-সভাপতি ইমরুল হাসান।
২০২২ সালে প্রথমবার নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতার পর ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার দিয়েছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী। সহ-সভাপতি আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিকও সমপরিমান অর্থ পুরস্কার দিয়েছিলেন মেয়েদের। তবে বাফুফের তরফ থেকে সেভাবে মেয়েদের পুরস্কার দেয়া হয়নি। তাবিথ আউয়ালের নতুন কমিটি আজ বড় অঙ্কের পুরস্কার ঘোষণা করতে যাচ্ছে।
দলের প্রত্যেক ফুটবলারকে পাঁচ লাখ টাকা করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। প্রায় ১৪ কোটি টাকা ঋণ রেখে দায়িত্ব ছেড়েছেন সালাউদ্দিন। এ কারণে এই মুহূর্তে নিজস্ব তহবিল থেকে মেয়েদের বোনাস দেওয়ার সামর্থ্য নেই বাফুফের। গুঞ্জন আছে, মেয়েদের এই বোনাসটা নতুন কমিটির সব সদস্য নিজেদের পকেট থেকে দেওয়ার ব্যাপারে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেন আজকের সভায়।
এদিকে দেশে অবহেলিত হলেও বাংলাদেশের নারী ফুটবলারদের কদর বাড়ছে বিদেশি লিগে। এরই মধ্যে সাবিনা, সানজিদা খাতুন আর মনিকা চাকমারা ভারত ও ভুটানের ক্লাবে খেলেছেন। এবার তো সাবিনা আর ঋতুপর্ণার ডাক এসেছে ইউরোপের উত্তর ম্যাসেডোনিয়ান ক্লাব ব্রেরা তিভেরিজা থেকে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাবিনা নিজেই। ক্লাবটি নিজ দেশের চ্যাম্পিয়ন। পরবর্তী মৌসুমে নারীদের উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে খেলবে দলটি। সাবিনা আর ঋতুপর্ণা দলটিতে যোগ দিলে বাংলাদেশের নারী ফুটবল বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পাবে নিঃসন্দেহে।