উপকূল অতিক্রম করছে হামুন

টুইট ডেস্ক : ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার গতির বাতাসের শক্তি নিয়ে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় হামুন।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আজিজুর রহমান জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে এ ঝড়ের বর্ধিতাংশ স্থলভাগ স্পর্শ করে।

এর আগে হামুন অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ের রূপ পেলেও উপকূলের কাছাকাছি এসে শক্তি হারিয়ে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেয়। ঝড়টি পুরোপুরি উপকূলে উঠে আসতে আট থেকে ১০ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন আজিজুর রহমান।

তিনি বলেন, “রাত ১২টা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ের মূল অংশ বা কেন্দ্রভাগ উপকূল অতিক্রম করা শুরু করবে এবং চলবে রাত ৩টা পর্যন্ত। আমরা কক্সবাজারে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার দমকা বাতাসের বেগ পেয়েছি।”

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরের নিয়াঞ্চাল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুট বেশি উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

হামুনের প্রভাবে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে।

ভারি বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমি ধস হতে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া অফিস।

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে আগের মতই ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেলে আবহাওয়া অফিস। কক্সবাজার সমুদ্রব্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

পায়রা সমুদ্রব্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। আর মোংলা সমুদ্রবন্দরকে আগের মতই ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

বাংলাদেশের ঘূর্ণিঝড় পূর্বাভাস ব্যবস্থা অনুযায়ী, ৫, ৬ ও ৭ নম্বর বিপদ সংকেত মাত্রার দিক দিয়ে সমান। বন্দরের কোন দিয়ে ঝড় যাবে তা বোঝাতেই সংখ্যার পার্থক্য করা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ থাকায় উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

মৌসুমি বায়ু বিদায় নেওয়ার পর পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্ট লঘুচাপ ধাপে ধাপে শক্তি বাড়িয়ে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ের রূপ পেয়েছে।

সোমবার ঘূর্ণিঝড়ে রূপ পাওয়ার পর এ ঘূর্ণিবায়ুর চক্রের নাম দেওয়া হয় ‘হামুন’। সাইক্লোন সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপের তালিকা অনুযায়ী এ অঞ্চলের ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয়। হামুন নামটি নেওয়া হয়েছে ইরানের প্রস্তাবিত নামের তালিকা থেকে। এ ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসছে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলের দিকে।