সকাল থেকে ষষ্ঠ দফার অবরোধ শুরু
নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকাতে ফের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সমমনা দলগুলো। বুধবার (২২ নভেম্বর) ভোর ৬টা থেকে ষষ্ঠ দফার এ অবরোধ চলবে শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত।
ঘোষণা অনুযায়ী সড়ক-রেল-নৌ ও রাজপথসহ সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালন করবেন দলগুলোর নেতাকর্মীরা। তবে সংবাদপত্রের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, অক্সিজেন সিলিন্ডার গাড়ি ও জরুরি ওষুধ পরিবহন এ অবরোধের আওতামুক্ত থাকবে।
এর আগে হামলা ও সংঘর্ষের মধ্যে ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ পণ্ডের প্রতিবাদে ২৯ অক্টোবর সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করে বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা কয়েকটি দল। এরপর পুলিশ হত্যা ও নাশকতার মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ শীর্ষ পর্যায়ের অনেক নেতাকেই গ্রেফতার করা হয়।
পরে ৩১ অক্টোবর থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ দফায় সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করে তারা। সবশেষ মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) ভোর ৬টা পর্যন্ত টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি পালন করে বিএনপি এবং যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলো।
এরইমধ্যে সোমবার (২০ নভেম্বর) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী একদিন বিরতি দিয়ে ফের টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের ডাক দেন।
তিনি অভিযোগ করেন, একতরফা নির্বাচনের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন যে সরকারের পথরেখা অনুসারে চলবে, তার প্রমাণ নিজেরাই দিচ্ছে। তারা সরকারের সাজানো প্রশাসনের কোনো রদবদল করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে।
আলাদা বিবৃতিতে জামায়াত, গণতন্ত্র মঞ্চ, এনপিপিসহ যুগপৎ ধারায় আন্দোলনরত ১২ দলীয় জোট, এলডিপি, নুরুল হক নুরের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদ, ড. রেজা কিবরিয়ার নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদ, গণফোরাম (মন্টু) ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টি ও বাংলাদেশ লেবার পার্টিসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল অবরোধ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানিয়েছে।
সবশেষে ডাকা অবরোধের আগের রাতে (মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় যাত্রীবাহী রাইদা বাসে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। পোস্তগোলা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে, মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, বিএনপির ২৮ অক্টোবরের সমাবেশ থেকে শুরু করে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত ২৪ দিনে নির্বাচন ঠেকাতে ডাকা হরতাল-অবরোধে দেশে ১৯৭টি যানবাহন ও ১৫টি স্থাপনায় আগুন দেয়া হয়েছে।
এর মধ্যে মোট বাস ১১৮টি, ট্রাক ২৬টি, কাভার্ডভ্যান ১৩টি, মোটরসাইকেল ৮টি, প্রাইভেটকার ২টি, মাইক্রোবাস ৩টি, পিকআপ ৩টি, সিএনজি ৩টি, ট্রেন ২টি, নছিমন ১টি ও লেগুনা ৩টি।
এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের পানিবাহী গাড়ি, পুলিশের গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স ১টি করে পোড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি বিএনপির ৫টি অফিস, আওয়ামী লীগের ১টি, পুলিশ বক্স ১টি, কাউন্সিলর অফিস ১টি, বিদ্যুৎ অফিস ২টি, বাস কাউন্টার ১টি, শোরুম ২টি এবং অন্য ২টি স্থাপনা পোড়ানো হয়েছে।